বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশের ছবিগুলো দু’বছর আগের

26
বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশের ছবিগুলো দু’বছর আগের
বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশের ছবিগুলো দু’বছর আগের

Published on: [post_published]

সম্প্রতি ফেসবুকে এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশের ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবির ক্যাপশনে বলা হচ্ছে পেটের ক্ষুধা সইতে না পেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আত্মহত্যা করেছেন এই বৃদ্ধ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ছবিটি দুই বছর আগের। ২ মে ২০২০ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছিল রেলওয়ে পুলিশ। সে সময়ে এ বিষয়ক সংবাদ প্রতিবেদনগুলোতে ব্যক্তির পরিচয় এবং মৃত্যুর কারণ জানা যায় নি। পুরনো ছবি তারিখ উল্লেখ না করে প্রচার করায় ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।

সম্প্রতি ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেজ থেকে প্রকাশিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।

ভাইরাল ছবির ক্যাপশন ধরে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, একই ক্যাপশনে ২০২১ সালেও ছবি দুটি ভাইরাল হয়েছিল ফেসবুকে। ছবির ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, উন্নয়নের জোয়ারে কাঁদে মানবতা পেটের ক্ষুধা সইতে না পেরে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় আত্ম হত্যা করেছেন এক বৃদ্ধ,,, ক্ষুধার যন্ত্রণার অভিশাপ পড়ুক ত্রাণ চোরদের উপর! হে আল্লাহ# এই গরীব নামে অসহায় মানুষের উপর আপনি সহায় হোন,, এরা বেশি কিছু চা না, দুবেলা দুমুঠো ভাত চায় ভাত

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ২০২০ সালের ৫ মে উক্ত ছবি দুটি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর সেই পোস্টের সূত্র ধরে কী-ওয়ার্ড এর সাহায্যে অনুসন্ধান করে ২ এবং ৩ মে, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পায় ফ্যাক্টওয়াচ টিম। প্রতিবেদনগুলো সূত্রে জানা যায়, ২ মে ২০২০ তারিখ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন এর ১নং প্লাটফর্মের পশ্চিম দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঝুলন্ত অবস্থায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছিল রেলওয়ে পুলিশ।

 

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এস. আই) মো. সেতাফুর রহমান সংবাদমাধ্যম কে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, দুপুরের দিকে বৃষ্টির পর ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতে পেয়ে লোকজন খবর দিয়েছিল। লকডাউনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ষ্টেশনের প্লাটফর্ম এলাকা অনেকটা নীরব ছিল। মরদেহের পাশে দুইটি ব্যাগ ছিল। একটি ব্যাগে জ্যাকেট ও কম্বল এবং আরেকটিতে কাপড় ছিল। গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে সেসময় ধারণা করা হয়েছিল।

পথচারীরা মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে এবং তার পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছিলেন সেতাফুর রহমান।

তবে শেষ পর্যন্ত সে ব্যক্তির পরিচয় এবং মৃত্যুর কারণ জানা যায় নি সংবাদ সূত্রে। মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন নিয়ে পরবর্তীতে কোনো সংবাদ পাওয়া যায় নি অনুসন্ধানে। তাই বৃদ্ধ ব্যক্তিটি “আত্মহত্যা করেছেন” বলে নিশ্চিত হওয়া যায় না।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.