সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, মাথাবিহীন একজন তরুণের দেহ মেঝেতে গড়াগড়ি করছে। বেশ কয়েকটি ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি মাদারীপুরের একটি মসজিদে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি পুরোনো এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশের বা মাদারীপুরের হত্যাকাণ্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি মূলত ভারতের ভগবানপুর বালাজি ধাম মন্দিরের একটি দৃশ্য, যেখানে ভূত বা প্রেতাত্মার প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই শারীরিক কসরত করা হয়।
ভাইরাল ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে বালাজি ভগবানপুর ধাম (Balaji Bhagwanpur Dham) নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ৭ মার্চ পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি দেখুন এখানে।
এর ক্যাপশনে হিন্দি ভাষায় লেখা, “कष्टभंजन भगवानपुर बालाजी धाम में भूतों पर पड़ती भयंकर मार।” গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্যে বাংলায় অনুবাদ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় “কষ্টভঞ্জন: ভগবানপুর বালাজি ধামে ভূতের প্রচণ্ড আক্রমণ”।
ভিডিওটি প্রাথমিকভাবে দেখলে মনে হতে পারে মাথাবিহীন একজন তরুণের দেহ মেঝেতে গড়াগড়ি করছে কিংবা মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। কিন্তু ভিডিওটির শেষাংশে দেখা যায়, একজন তরুণ ও একজন তরুণী মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন এবং তাদের মাথা মেঝেতে থাকা গর্তে ঢুকিয়ে বিভিন্ন শারিরীক কসরত করছেন। অর্থাৎ, তারা মাথাবিহীন নয়।
চ্যানেলটির একাধিক ভিডিও পর্যালোচনা করে জানা যায়, ভূত বা প্রেতাত্মা দূর করার জন্য এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। এই চর্চাকে ইংরেজিতে “এক্সরসিজম” বলে অবহিত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ভিডিওটিতে যে স্থাপনা ও মূর্তিগুলো দেখা যায়, সেগুলোতে হিন্দি ভাষায় লেখা দেখা যায়।
এসব তথ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, ভিডিওটি পুরোনো এবং ভারতের।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মাদারীপুরে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয় মসজিদে।বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা মসজিদে আশ্রয় নিলে, হামলাকারীরা মসজিদের মধ্যে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে জখম করে। যার বিস্তারিত রয়েছে প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনে ।
সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
Claim: সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, মাথাবিহীন একজন তরুণের দেহ মেঝেতে গড়াগড়ি করছে। বেশ কয়েকটি ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি মাদারীপুরের একটি মসজিদে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh