বেঙ্গালুরুতে ৩ জন নিহত হওয়ার পুরনো খবর ভাইরাল

15
বেঙ্গালুরুতে ৩ জন নিহত হওয়ার পুরনো খবর ভাইরাল বেঙ্গালুরুতে ৩ জন নিহত হওয়ার পুরনো খবর ভাইরাল

Published on: [post_published]

ভারতের বেঙ্গালুরুতে নবী মুহাম্মদ (সা) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ জন শহীদ হয়েছেন- এমন একটি খবর সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে । ভাইরাল এ খবরে উক্ত ঘটনার কোন রেফারেন্স কিংবা সময় উল্লেখ করা হয়নি। ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে  ঘটনাটা ১১ই আগস্ট, ২০২০ সালের ভারতের বেঙ্গালুরুর। পুরনো খবর নতুন করে ভাইরাল করায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে । তাই ফ্যাক্টওয়াচ একে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে।

গুজবের উৎস

ভাইরাল পোস্টে বলা হয়েছে,  “ভারতের বেঙ্গালরে বিশ্ব নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন আশেকে রাসুল।

__আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন 

আমিন।

ভাইরাল হওয়া পোস্টে তিনজন মৃত মানুষের কোলাজ ছবি যুক্ত করা হয়।

এমনই কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধান

ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে বেঙ্গালুরুর ঘটনাটা ২০২০ সালের ১১ আগস্ট রাতের।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, কংগ্রেস দলীয় একজন সংসদ সদস্য ,  Akhanda Srinivasamurthy এর ভাগ্নে, P. Naveen Kumar একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেন, যে পোস্টে ইসলামের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা) কে ব্যঙ্গ করা হয়।

উক্ত ফেসবুক পোস্ট বেশ ভাইরাল হয়। ১১ই আগস্ট সন্ধ্যা থেকে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির সদস্যরা সংসদ সদস্যের বাড়ির সামনে এবং নিকটস্থ থানার সামনে নবীন কুমার কে গ্রেফতারের দাবিতে অবস্থান নেয়। নিকটবর্তী ডিজে হালি পুলিশ স্টেশন এবং কেজি হালি পুলিশ স্টেশনে স্থানীয় জনতা অবরোধ করে এবং ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশ উত্তেজিত জনতার উপর গুলি চালায় ।

Deutsche Welle এর খবর থেকে জানা যাচ্ছে এ ঘটনায় তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়, ৬০ জনের মতো পুলিশ আহত হয়, এবং শতাধিক বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়।

পোস্টটি দেখুন এখানে

The Federal -এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে নিহত হওয়া তিনজনের নাম হচ্ছে ওয়াজিদ খান (১৯) -একজন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস পারসন, ইয়াসিন পাশা (২০) -একজন মাংসের দোকানের কর্মচারী এবং শেখ সিদ্দিক -একজন অটো ড্রাইভার।

মৃত ইয়াসিন পাশার মা দাবি করেন তার ছেলে নির্দোষ। ইয়াসিনের বাবা আনোয়ার পাশা দাবি করেন ইয়াসিন তার ভাইয়ের বাসায় রাতের খাবার খেতে গেছিল। তিনি ইয়াসিনকে যেতে বারণ করেছিলেন কিন্তু ইয়াসিন ভাবছিল যেহেতু সে বাইকে যাবে তাই তার কিছু হবেনা।

নিহত ওয়াজিদ খানের ভাই শহীদ জানান তার ভাই একজন এয়ার কন্ডিশনিং সার্ভিস পারসন। সে ওইদিন রাতে কাজ থেকে ফিরছিলো। ওয়াজিদের গায়ে বুলেট লাগলে তার বন্ধুরা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। হসপিটাল থেকে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলো। তারা এম্বুলেন্স না পেয়ে অটো ভাড়া করে আসছিলো।

তবে নিহত শেখ সিদ্দিকের চাচা বলেন তিনি জানেন না শেখ সিদ্দিক এই বিক্ষোভের সাথে জড়িত ছিল কিনা। তবে তাকে যতটুকু চেনেন তাতে তার মনে হয়না সিদ্দিক এই বিক্ষোভের সাথে জড়িত ছিলো। সিদ্দিকই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলো।

প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধানে ভাইরাল হওয়া কোলাজ ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশ্য নিহত হওয়া তিনজনের ভিতর ওয়াজিদ খান এবং ইয়াসিন পাশার ছবি খুজে পাওয়া গেছে। তবে ভাইরাল হওয়া ছবির সাথে তাদের ছবির মিল পাওয়া যায়নি।

নিহতদের ছবিটি দেখুন এখানে

 

অতএব কোন রেফারেন্স এবং সময় উল্লেখ না করে এবং বিভ্রান্তিকর ছবি পোস্ট করে পুরনো দাঙ্গার খবর নতুন করে ভাইরাল করায় ফ্যাক্টওয়াচ নিউজটিকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.