চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে এক কিশোর নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু হাবেভাবে বোঝা যাচ্ছে যে সে এখানকার ছাত্র নয়। এই ভিডিও শেয়ার করে অনেকে ইঙ্গিত করছেন যে, চলতি আন্দোলনটা ছাত্ররা শুরু করলেও সেখানে অনেক অছাত্র মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি গত বছরের আগস্টের, যখন এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে একদল ছাত্র আন্দোলন করছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, জনৈক আন্দোলনকারীকে একজন সাংবাদিক জেরা করতে থাকেন তাঁর পরিচয় সম্পর্কে। ছেলেটা নিজেকে এক বার ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ এর স্টুডেন্ট এবং আরেকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর স্টুডেন্ট বলে দাবি করেন। এরপর কোন আবাসিক হলের স্টুডেন্ট সে কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি আমতা আমতা করেন। বিভিন্ন পর্যায়ে কখনো ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলের স্টুডেন্ট’, ‘হলের সামনের স্টুডেন্ট’ এবং ‘কাজী নজরুল হলের স্টুডেন্ট’ বলে নিজেকে দাবি করেন, যে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হল নেই।
প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেখা গেল, ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ডের মূল ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছিল ‘ক্লিক ইত্তেফাক’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে, যেটি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাথে সম্পৃক্ত। এই ভিডিও আপলোডের তারিখ ছিল ২০২৩ সালের ৭ই আগস্ট এবং পোস্টের ক্যাপশন ছিল- আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়ি: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বহিরাগত
২০২৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ১৭ই আগস্ট থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর কিছুদিন পূর্বে ৭ই আগস্ট ঢাকার শাহবাগ সহ কয়েকটি স্থানে কিছু এইচএসসি পরীক্ষার্থী জড়ো হয়ে পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময়কার কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে সেই বিক্ষোভের খবরগুলো উঠে এসেছে। ( দেখুন এখানে, এখানে, এখানে )
ইত্তেফাকের ক্যাপশন এবং প্রাসঙ্গিক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে আলোচ্য এই ভিডিওটি সেই সময়কার বলেই প্রমাণিত হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে,২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (যেটি কোটা সংস্কার আন্দোলন নামেও পরিচিত) এর সাথে এই ভিডিওর কোনো সম্পর্ক নেই।
তাই ফ্যাক্টওয়াচ ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওগুলোকে ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।