যা দাবি করা হচ্ছে: এটা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির ভিডিও।
অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে: দাবিটি মিথ্যা। নির্বাচনের আগের রাতে ঢাকায় মশাল মিছিল বা অগ্নিসংযোগের প্রমাণ নির্ভরযোগ্য কোন মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভাইরাল ভিডিওটি মূলত গত ২৬ নভেম্বর সিলেটে বিএনপির অবরোধের সমর্থনে দলটির নেতাকর্মীদের মশাল মিছিল করার সময়কার।
ভাইরাল ভিডিওটির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য শুরুতেই এর বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ নামের একটি ফেসবুক পেইজে ভাইরাল ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২৭ নভেম্বর আপলোড করা হয়েছিল এবং এর ক্যাপশনে লেখা ছিল “সিলেটে সিএনজি অটোরিকশা-এ্যাম্বুলেন্সে আ*গু*ন-ভাঙ-চু-র করলো বিএনপি।”
পরবর্তীতে ফেসবুকে ভাইরাল এই পোস্টগুলোর কমেন্ট সেকশন অনুসন্ধান করে দেখলে বেশ কিছু কমেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, এই ঘটনাটি গত মাসে সিলেটে ঘটেছিল।
তাই এ ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কিছু কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে প্রথম আলোর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ নভেম্বর আপলোড করা “সিলেটে অবরোধের সমর্থনে মশালমিছিল ও যানবাহন ভাঙচুর ” শীর্ষক একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে ভাইরাল ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মুল ভিডিওটি থেকে জানা যায় গত ২৬ নভেম্বর অবরোধের সমর্থনে সিলেটে মশাল মিছিল করেছিল সেখানকার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেইদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে সিলেটের সুবিদবাজার এলাকায় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার মত ঘটনা ঘটেছিল।
পরবর্তীতে প্রথম আলোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে সিলেটে মশাল মিছিল বিষয়ক গত ২৬ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়,
“সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকার দিক থেকে অবরোধের সমর্থনে একটি মশাল মিছিল আসে। মিছিলটি সুবিদবাজার মোড় এলাকায় পৌঁছালে সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পাঠানটুলা এলাকার দিক থেকে আম্বরখানাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।”
উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ঢাকায় অগ্নিসংযোগ বা মশাল মিছিলের মত কোনো ঘটনা ঘটেছিল কি না — এ সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হলেও নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আলোচিত ভিডিওটি যেহেতু গত নভেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, সুতরাং এটা নির্বাচনের আগের রাতের ভিডিও নয় কোনো ভাবেই।
তাই, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।