শিক্ষকদের হাঁসের ডাক নকল করার ভিডিওটি পুরানো

88
শিক্ষকদের হাঁসের ডাক নকল করার ভিডিওটি পুরানো
শিক্ষকদের হাঁসের ডাক নকল করার ভিডিওটি পুরানো

Published on: [post_published]

সম্প্রতি ফেসবুকে নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় হাঁসের ডাক নকল করছেন শিক্ষকরা — এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, এটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০২২ সালে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াডের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের দৃশ্য। এই কার্যক্রমটি নতুন শিক্ষাক্রমে নেই তাই স্বাভাবিকভাবে বর্তমানে এমন কোনো প্রশিক্ষণও চলছে না। কিন্তু এই ভিডিওকে নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে প্রশিক্ষণ চলার ভিডিও দাবি করছে অনেকে। এ নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ইতোমধ্যে তাদের ওয়েবসাইট থেকে সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাই সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টকে  ‘বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিচ্ছে।

গুজবের উৎস

এ বছর ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে


ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ভাইরাল ভিডিওটিতে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পেছনের ব্যানারে লেখা রয়েছে – প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ।

রিভার্স ইমেজ এবং কিওয়ার্ড সার্চিং-এর মাধ্যমে ফেসবুকে Gazipur City নামক একটি পেইজে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায় যেটি ২০২২ সালের মার্চ মাসে পোস্ট করা হয়েছিলো।

 

 

একাধিক শিক্ষকের ২০২২ সালের ফেসবুক পোস্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে শিক্ষকদের হাঁসের ডাক অনুকরণের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি সেসময় সমালোচিত হয়েছিলো। এরকম দুটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে

 

 

এছাড়া আরেকটি ফেসবুক গ্রুপে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পোস্ট থেকে এ কর্মসূচীর প্রশিক্ষণকাল এবং ট্রেইনারদের নামের লিস্ট পাওয়া যায়।

 

এদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ৩ ডিসেম্বর একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে যেখানে এ ভিডিওর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে – কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে এটা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।

একই দিনে প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রথম আলোকে বলেছেন নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ নয় এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এম তারিক আহসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও সম্পর্কে বলেছেন, এগুলো নতুন শিক্ষাক্রমের কোনো বিষয় নয় এবং নতুন শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণেও এমন কোনো বিষয় নেই। হাঁসের প্যাক প্যাক ছড়ার মাধ্যমে শিশুদের ভগ্নাংশ শেখানোর একটি কৌশল যা গণিত অলিম্পিয়াড প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে ছিল। গণিত অলিম্পিয়াড নামে প্রজেক্টটি এখন আর নেই এবং বর্তমানে প্রশিক্ষণও আর হচ্ছে না। অন্য ভিডিওর বিষয়গুলোও নতুন শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে নেই।

সর্বোপরি দেখা যাচ্ছে, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ। এর সাথে নতুন শিক্ষাক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

No Factcheck schema data available.