যা দাবি করা হচ্ছে:এটা ভারতের স্টেডিয়ামে টাঙানো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের একটি ছবির সামনে দিয়ে পাকিস্তান দলের ক্রিকেটারদের হেঁটে যাওয়ার ছবি।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: ছবিটি বিকৃত। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের যে স্থান দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে অবস্থিত রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ, কোনো স্টেডিয়াম নয়। সেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের কোনো ছবি নেই। আত্মসমর্পণের ছবিটি মূলত সেখানে এডিট করে বসিয়ে দিয়ে ভিত্তিহীন এই দাবি তোলা হচ্ছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে পাকিস্তান দলের কয়েকজন ক্রিকেটারকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবির সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে। তাই ছবিটি সত্যিই ভারতের কোনো স্টেডিয়ামের কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছবিটি ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করে দেখে ফ্যাক্টওয়াচ টিম। অনুসন্ধানে, পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট কভারেজ প্ল্যাটফর্ম Grassroots Cricket এর অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর টুইট করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দল ভারতের হায়দ্রাবাদে পৌঁছেছে। এই ভিডিওতে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে বিমানবন্দরের একটি প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ থেকে বের হয়ে বোর্ডিং পাস বিষয়ক কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে দেখা যায়।
কিন্তু, পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ করার ছবিটি সেখানে দেখতে পাওয়া যায়নি। এই ভিডিওটির ১২ সেকেন্ডের অংশটুকুর সাথে ভাইরাল হওয়া ছবিটির ফ্রেম এবং দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
দেখা যাচ্ছে যে, পাকিস্তান ক্রিকেট দল যে প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ থেকে থেকে হেঁটে যাচ্ছিল সেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ করার কোনো ছবি ছিল না। ছবিটি পরে এডিট করে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
পরবর্তিতে, ভিডিওগুলো কোন বিমানবন্দর থেকে ধারণ করা হয়েছিল এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে ক্রীড়াভিত্তিক পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিয়ো সুপারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তান ক্রিকেট দল আগামী ৫ অক্টোবর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩ তম আসরে অংশগ্রহণ করার জন্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর হায়দ্রাবাদ শহরে অবস্থিত রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছিল। এই প্রতিবেদনে ব্যবহার করা ভিডিওতেও ভাইরাল ছবিটির অনুরূপ দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, ভারতের কোনো স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ করার ছবিটি টাঙানো আছে কি না এ ব্যাপারে বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হলেও এই দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোষ্টগুলোকে বিকৃত হিসেবে হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।