সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটা বিএনপির মিছিল আসার খবর পেয়ে আওয়ামিলীগ কর্মীদের পালিয়ে যাওয়ার ভিডিও। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটা গত ২৮ জুলাই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে হট্টগোলের সময়কার ভিডিও। যদিও এই একই দিন বিএনপির নেতাকর্মীরাও ঢাকায় সমাবেশ করেছিল এবং বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ ঘটেছিল। কিন্তু, তার সাথে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সমকালের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল “ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের মধ্যে শান্তি সমাবেশে হট্টগোল”। ভিডিওর মধ্যে কোথাও বিএনপির মিছিল আসা সংক্রান্ত কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য সৈকত হাসানের বরাত দিয়ে জানানো হয়, “বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তৃতা যখন শেষ পর্যায়ে, তখন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সমর্থকেরা কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সমর্থকদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে উপজেলা চেয়ারম্যানের বেশ কিছু সমর্থক আহত হন”।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। এই একই দিনে নয়াপল্টনে থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ প্লাজায় সমাবেশ করেছিল আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। কিন্তু, গত ২৮ জুলাই নয়াপল্টন বা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ প্লাজায় আওয়ামীলীগের সাথে বিএনপির কোনো ধরণের সংঘর্ষ ঘটেছিল কি না এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, গত ২৮ জুলাই বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
যেহেতু ভাইরাল ভিডিওর হট্টগোলের সাথে আওয়ামীলীগ-বিএনপির সংঘর্ষ কিংবা কারো পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।