‘বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র’ – এমন বক্তব্যযুক্ত কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এর ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে উক্ত সংবাদমাধ্যম এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজগুলোতে এই কার্ডটি দেখা যায়নি। এছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এর এমন কোনো বক্তব্য পাবলিক ডোমেইনে পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।
প্রথম আলো’র লোগোযুক্ত এই ফটোকার্ডে পিটার হাস এর ছবির সাথে ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়েছে- নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র-পিটার হাস।
ছবিটির নিচের দিকে বামপাশে লেখা রয়েছে, বাংলাদেশ । ৬ জানুয়ারি ২০২৪
অর্থাৎ, এটি প্রথম আলো’র বাংলাদেশ সেকশনে ৬ই জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।
তবে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, ৬ই জানুয়ারি তারিখে কমপক্ষে ১৪টি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ টি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ সেকশনের আওতায়। তবে এদের মধ্যে কোনোটাতেই পিটার হাস এর উক্ত বক্তব্যটি পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ছড়িয়ে পড়া ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র আসল ফটোকার্ডের ফন্ট এর অমিল দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া, ৬ই জানুয়ারি রাত ১০টা ৩০ মিনিটে প্রথম আলোর ভেরিফাইড পেজ থেকে আরেক ফটোকার্ডের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, পিটার হাসের নামে ছড়ানো ফটোকার্ডটি নকল।
অন্যদিকে, দেশ টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, ৬ই জানুয়ারি তারিখে কমপক্ষে ৬ টি ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়েছে , যাদের কোনোটাতেই পিটার হাস এর উক্ত বক্তব্য নেই।
প্রথম আলো, দেশ টিভি বা অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটেও পিটার হাস সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছেনা।
সর্বশেষ গত ২১শে সেপ্টেম্বর ঢাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন , বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোন হস্তক্ষেপ করবে না । যুক্তরাষ্ট্র চায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ হোক।
এই সময়ের আগে-পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় ছিলেন। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসার আহবান জানিয়ে তিনি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন । তবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনকে নিয়ে তাঁর কোনো সাধারণ বক্তব্য পাবলিক ডোমেইনে দেখা যায় নি।
সার্বিক বিবেচনায় পিটার হাসের বক্তব্য দাবি করে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।