গত ২৫ ও ২৬ জুন “ডিএনএ টেস্টে ফেঁসে গেলেন পরী” শিরোনামে একাধিক ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল সংবাদ প্রকাশ করেছে। বাস্তবে সংবাদের শিরোনামটি মিথ্যা। মূলত গত ২৩ জুন ২০২১ (বুধবার) নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলার শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ডিএনএ টেস্টের কথা তুলেছেন আদালতে। সেদিন শুনানি শেষে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও আরেক আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। তবে এখনও ডিএনএ টেস্টের কোনো অনুমতি দেয়নি আদালত।
মিথ্যা শিরোনামে প্রকাশিত বেশ কিছু সংবাদ ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে শেয়ার হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে,এখানে,এখানে,এখানে এবং এখানে।
ভুয়া শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদগুলোর বিস্তারিত অংশ ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে ফ্যাক্টওয়াচ টিম দেখতে পায়, উক্ত সংবাদগুলো মূলত দুটি ভিন্ন ভিন্ন সংবাদকে হুবহু কপি করে তৈরি করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উক্ত খবরগুলোর প্রথম প্যারাটি গত ১৫ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে জুম বাংলা থেকে প্রকাশিত “নিজেই নিজেকে বিয়ে করতে চান শ্রীলেখা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রথম প্যারাটি হুবহু কপি করে লেখা হয়েছে। শুধু “শ্রীলেখা”র জায়গায় “পরিমণি” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
ভুয়া শিরোনামের সংবাদগুলোর দ্বিতীয় প্যারা থেকে সংবাদের শেষ পর্যন্ত পুরো লেখাটি হুবহু কপি করা হয়েছে গত ২৩ জুন ২০২১ তারিখে প্রকাশিত “পরীমনির ঘটনায় ডিএনএ টেস্ট করাতে চান আইনজীবী” শিরোনামে যুগান্তরের একটি সংবাদ থেকে। উল্লেখ্য, যুগান্তরের খবরটিতে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে, পরীমণির ডিএনএ টেস্ট হয়েছে বা ডিএনএ টেস্টে তিনি ফেঁসে গেছেন।
মূলত গত ২৩ জুন ২০২১ (বুধবার) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের আদালতে ওই দুই আসামিকে গ্রেফতার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এই রিমান্ডের এ আবেদন করেন সাভার থানার পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন। যদিও শুনানি শেষে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
যুগান্তরের প্রতিবেদনটির বরাতে জানা গেছে, আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেছেন, “অবশ্যই তিনি (পরীমণি) সেলিব্রেটি। তা না হলে কি আর রাত ১২টায় ক্লাবে যায়। মামলায় ধর্ষণের নয় চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করানো যেতে পারে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এসব করলেও প্রমাণ পাওয়া যাবে যে নাসির উদ্দিন মাহমুদ নিরপরাধ।“
উল্লেখ্য যে, যুগান্তরের প্রতিবেদনটি সহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের কোনো সংবাদে উল্লেখ নেই যে নায়িকা পরীমণির ডিএনএ টেস্ট করানো হয়েছে, বা ডিএনএ টেস্টের অনুমতি দেয়েছে আদালত। যেহেতু যুগান্তরের প্রতিবেদনটি হুবহু কপি করে তাতে মিথ্যা শিরোনাম ব্যবহার করে সংবাদটি পরিবেশন করেছে উক্ত ওয়েব পোর্টালগুলো, তাই ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংবাদটি মিথ্যা।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?