ফেসবুকে যা ছড়াচ্ছেঃ ঢাকার রাস্তায় একটি মিছিলের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে এটা গেরুয়া পোশাকে বাংলাদেশের হিন্দুদের মিছিলের ভিডিও। মিছিলটি আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরে হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবাদে করা হয়েছিল।
আসল ঘটনাঃ দাবিটি মিথ্যা। বাস্তবে এটা ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ছাত্রলীগের সমাবেশ যোগদান করতে যাওয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের ও পৌরসভা ছাত্রলীগের মিছিলের ভিডিও। আওয়ামীলীগের নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের এই মিছিলটি বের হয়েছিল। এর সাথে বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সত্যিই গেরুয়া পোশাকে বাংলাদেশের হিন্দুদের মিছিলের কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য শুরুতেই ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখে ফ্যাক্টওয়াচ টিম। এই ভিডিওর মিছিলে ব্যবহৃত ব্যানারটি খেয়াল করলে দেখা যাবে সেখানে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব স্মরনে গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের মিছিলের ব্যাপারে উল্লেখ আছে। ব্যানারের কোথাও হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সংশ্লিষ্ট কিছু দেখতে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মিছিলকারীদের পরনে গেরুয়া রংয়ের কাছাকাছি কমলা রংয়ের পোশাক দেখতে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে, ভাইরাল এই ভিডিওর উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য ব্যানারের লেখাগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের ফেসবুক পেজ থেকে ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩- এ আপলোড করা আলাদা আলাদা পোস্টে একটি মিছিলের ভিডিও এবং ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে মিছিলকারীদের পরনের পোশাক এবং ব্যানারের হুবহু মিল পাওয়া যায়। পোস্টগুলোর ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয় যে, মিছিলকারীরা গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের সদস্য। তারা ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে মিছিল দিয়ে যোগদান করতে গেছিল। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামীলীগের নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল।
আওয়ামীলীগের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের সদস্যদের এই মিছিলের ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যাবে।
অর্থাৎ, ভাইরাল ভিডিওটি ৫ আগাস্ট ২০২৪- এ আওয়ামীলীগ সরকার পতনের অনেক আগের। অন্যদিকে, এই সরকার পতনের পরে বাংলাদেশের কোথাও গেরুয়া পোশাকে হিন্দুদের মিছিল হয়েছিল কি না নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।