সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটিতে যে রেলগাড়িটি দেখা যাচ্ছে, সেটিই পৃথিবীতে চলা প্রথম রেলগাড়ি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পৃথিবীতে চলা প্রথম রেলগাড়ি এটি নয়। বরং রেলগাড়ি চলার এই ভিডিওটি একটি সিনেমার দৃশ্য থেকে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া ক্যামেরা আবিষ্কারের সময় ধরা হয় ১৮৮৮ থেকে। যদিও উক্ত ক্যাপশনের দাবি অনুসারে ১৮০৯ সালের ২৪শে ডিসেম্বরে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ, এমন দাবির কোনো সত্যতা নেই।
সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওটির স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে একই রকমের আরও কিছু ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানের একটি ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা দেখা যায়, “Our Hospitality Flim’s Comedy Scene”। যার সূত্র ধরে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে গুগলে সার্চ করা হয়। শুরুতে “Our Hospitality” নামক চলচ্চিত্রটির ট্রেলার পাওয়া যায়। ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের ট্রেলারের ঠিক ১ মিনিট অংশে রেলগাড়ি চলার যে দৃশ্যটি আছে, হুবহু সেটিই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ট্রেলারটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ “Our Hospitality” চলচ্চিত্রের অংশকে পৃথিবীতে চলা প্রথম রেলগাড়ি দাবিতে শেয়ার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯২৩ সালে Buster Keaton এবং John G, Blystone সিনেমাটি নির্মাণ করেন। সিনেমাটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানুন এখানে।
1774 সালে জেমস ওয়াটের আবিষ্কার স্থির বাষ্প ইঞ্জিন সম্পর্কে বিশ্ববাসী অবগত হয়। পরে রেলগাড়ির ধরণের পরিবর্তন আসে। 1800 সালে তার জেমস ওয়াট তার আবিষ্কার জনসম্মুখে নিয়ে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম স্টিম ইঞ্জিন 1804 সালে রেল লাইন বরাবর চলতে শুরু করে। রেলগাড়ির গোড়ার কথা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন এখানে এবং এখানে।
আলোচ্য ভিডিওটিকে ১৮০৯ সালের ডিসেম্বরে তোলা বলে দাবি করা হয়েছে। সে সময়ে রেলগাড়ির অস্তিত্ব থাকলেও ভিডিও ক্যামেরার অস্তিত্ব কোনোভাবেই ছিল না।
সুতরাং ভাইরাল ভিডিওটির মাধ্যমে রেলগাড়ি সম্পর্কে যেসব তথ্য প্রচার করা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। যে কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এমন দাবিগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।