১২, ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৯ জুন ২০২১ তারিখে “হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) দুনিয়ার সর্বকালের সেরা মানব: রানী মুখার্জি” শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করেছে একাধিক অনলাইন পোর্টাল। একই শিরোনামে পূর্বেও এই সংবাদ প্রচার করেছিল বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল। খবরগুলোতে বলা হয়েছে, ‘হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে দুনিয়ার সর্বকালের সেরা মানব’ বলে টুইট করেছেন ভারতের বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রানী মুখার্জি। বাস্তবে রানী মুখার্জি এমন কিছু বলেননি এবং তার কোনো টুইটার একাউন্টও নেই।
গতবছরেও বিভিন্ন ওয়েব পোর্টাল থেকে একই শিরোনামে এই ভুয়া খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল যা ফেসবুকে শেয়ার হতে দেখা গিয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে,এখানে,এখানে,এখানে এবং এখানে।
ভুয়া খবরটির সম্ভাব্য উৎস
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, kohraam.com নামের একটি বলিউড অনলাইন ম্যাগাজিন “Prophet Muhammad most remarkable man in the history of mankind, tweets Rani Mukerji” শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশ করেছিল ২০১৬ সালের ৩রা জানুয়ারিতে। লেখাটির বাংলায় অনুবাদ করলে যা মানে দাঁড়ায় – “যখন কিছু শিল্পী, অভিনেতা এবং লেখক নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে উপহাস বা ক্যারিকেচার করার বিষয়টি তাদের শখে পরিণত করেছেন, ভারতের বিশিষ্ট বলিউড তারকা রানী মুখার্জির নাম এবং ছবি সম্বলিত একটি টুইটার নবীকে মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানুষ হিসাবে বর্ণনা করে প্রশংসা করেছেন। আমি মহান নবী মুহাম্মদের জীবন ও চরিত্র যতটুকু অধ্যয়ন করেছি, তিনি মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানুষ!” যদিও টুইটটি ভ্যারিফাইড নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে উক্ত লেখাটিতে। তথ্যসূত্র হিসেবে Charminar Times News এর কথা উল্লেখ করা হলেও এমন কোনো নিউজ খুঁজে পায়নি ফ্যাক্টওয়াচ টিম।
এদিকে Nauty নামের একটি টুইটার একাউন্ট থেকে গত ৩ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে ‘Prophet Muhammad most remarkable man in the history of mankind, tweets Rani Mukerji’ লেখা সংবলিত একটি টুইট করা হয়। সেই তথ্যসূত্র হিসেবে একটি নিউজের লিংক উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত লিংকে ফ্যাক্টওয়াচ টিম প্রবেশ করে দেখতে পায়, নিউজটি ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে, “নিবন্ধটি মুছে ফেলা হয়েছে কারণ এটির উত্সটি একটি নকল টুইটার অ্যাকাউন্ট হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।“
রানী মুখার্জি বিভিন্ন সময়ে তার নিজস্ব কোনো টুইটার একাউন্ট না থাকার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ২০১৭ সালে কাশ্মীর বিষয়ে তার নামের এক ছদ্ম টুইটার একাউন্ট থেকে একটি বক্তব্য পোস্ট করা হয় যা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে তার পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় তিনি কখনো সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন না এবং তার নিজস্ব কোনো টুইটার একাউন্ট নেই।
এবিষয়ে ফ্যাক্টওয়াচ গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে একটি লেখা প্রকাশ করেছিল। লেখাটি পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এই লিংকে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?