‘ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিন খান পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন’ – এমন একটি গুজব ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সাথে বিএনপিকর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছিলেন। সেই নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল আহমেদ। সেদিন ছাত্রদল নেতা রবিন খান গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ একে মিথ্যা আখ্যা দিচ্ছে।
গুজবের উৎস
১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রস্তুতিমূলক সমাবেশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। এর প্রেক্ষিতে সেদিন বিকাল থেকে বিএনপি সমর্থনকারী বিভিন্ন ফেসবুক প্রোফাইল, গ্রুপ ও পেইজ থেকে পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ে। এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে ।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান
৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ফখরুল ইসলাম ফাহাদের ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে বিকাল ৫টা নাগাদ এই পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে রবিন খান নিহত হন নি। তিনি পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ঢাকা মহানগর ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের দপ্তর সম্পাদক বদিউজ্জামান বিপ্লবের ফেসবুক একাউন্ট থেকেও রবিন খানের নিহত না হবার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
৭ ডিসেম্বর রাত ১১:০৫ এ দৈনিক প্রথম আলোর প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সেদিনের সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামে একজন নিহত এবং অর্ধশত বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রবিন খান রয়েছেন।
দেখা যাচ্ছে, রবিন খান নিহত হবার গুজব বিকাল থেকে ছড়িয়ে পড়লেও প্রথম আলো-র রাত ১১টার রিপোর্টে তাকে গুরুতর আহত উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে ঘটনার পরদিন ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে ছাত্রদল নেতা রবিন খানকে ঘটনাস্থলের বর্ণনা দিতে দেখা যায়।
ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদল আদাবর থানার সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মজুমদার জসিমের ১২ ডিসেম্বরের দুটি পোস্ট থেকে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিন খানকে দেখতে গিয়েছিলেন।
এছাড়া আরো কিছু ছাত্রদলকর্মীর একাউন্ট থেকে রবিন খানকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া সংক্রান্ত ১২ ডিসেম্বরের পোস্ট দেখুন –
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সাথে সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কেউ মারা যান নি। একই ঘটনায় ছাত্রদল নেতা রবিন খান গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?