সম্প্রতি সংসদে ব্যারিস্টার রুমিন রুমিন ফারহানা ও এমপি হারুনকে গ্রেফতারের চেষ্টা ক্যাপশনে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওটি চার বছরের পুরনো দুটি বক্তব্যকে সংযুক্ত করে বানানো হয়েছে। ভিডিওটিতে সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও হারুন কে সংসদে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে এমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও এধরণের কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির শুরুতে রুমিন ফারহানার একটি বক্তব্য দেখা যায়। বক্তব্যটির বিস্তারিত তথ্য পেতে একাধিক কী-ওয়ার্ডের মাধ্যমে গুগলে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্টওয়াচ টিম। অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সংসদের প্রথম দিনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখার জন্য দুই মিনিট সময় পান। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, “আজকে সংসদে আমার প্রথম দিন। যে কোনো রাজনীতিবিদের মতোই সংসদে আসা, সংসদে দেশের কথা, মানুষের কথা বলা আমার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, আমি এমন একটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছি, যেই সংসদটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের পরপরই যদি আপনারা টিআইবির রিপোর্ট দেখেন, যদি আপনারা বিদেশি গণমাধ্যম দেখেন, যদি আপনারা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেখেন, যদি আপনারা নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট দেখেন, আপনারা দেখবেন এই সংসদটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সুতরাং আমি খুশি হবো যদি এই সংসদের মেয়াদ আর একদিনও না বাড়ে”।
রুমিন ফারহানার এই বক্তব্য ঘিরে সংসদে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সরকারদলীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা রুমিন ফারহানার বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় স্পিকার তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তব্য শেষ করতে বলেন।
অপরদিকে ভিডিওটির পরবর্তী অংশে এমপি হারুন অর রশীদের একটি বক্তব্য দেখানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, সংসদে বিএনপির হারুন অর রশিদ ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে বিভ্রাটের সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম হচ্ছে ইসলাম। ঈদের চাঁদ দেখা কমিটি রয়েছে। চাঁদ দেখা যায় সন্ধ্যার সময়। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী প্রথমে রাত ৯টায় ঘোষণা দিলেন, কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ হবে না। আবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করেই আবার বলা হলো, চাঁদ দেখা গেছে, কাল ঈদ। এ নিয়ে জনমনে মারাত্মক ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। আর ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এ কথা যারা বলেন তাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, এ কথাটি যদি মানতে হয় তাহলে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করা উচিত।“ চাঁদ দেখা নিয়ে বিভ্রাটের জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এই দুটি ভিডিওর সমন্বয়ে ভাইরাল ভিডিওটি বানানো হয়েছে। বিএনপির দুজন সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও এমপি হারুনের সেদিনের বক্তব্যের জেরে সংসদে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে সেখানে গ্রেপ্তারের চেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সঙ্গত কারণে এই ভিডিওর ক্যাপশনটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?