যাদাবিকরাহচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হার্ট এ্যাটাক করেছেন, বা ইন্তেকাল করেছেন । গত ১৭ই জুলাই প্রথম এই গুজব দেখা গেলেও ১ আগস্ট থেকে আবারো এটা দেখা যাচ্ছে।
যাপাওয়াযাচ্ছে: এই গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেয়ার খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। তাই বলা যায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি মিথ্যে।
গত ১৭ জুলাই, ২০২৪ তারিখে “ব্রেকিং নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্তেকাল করেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” এমন একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু , এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরেও গত ১৭ই জুলাই থেকে ১লা আগস্ট পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কার্যক্রম গণমাধ্যমে এসেছে। অর্থাৎ,তিনি নিশ্চিতভাবেই বেঁচে আছেন এবং নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত ১৭ই জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন, ২১ জুলাই তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন, ২২ জুলাই নিজ কার্যালয়ে দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, ২৩ জুলাই নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ করেন, ২৪ জুলাই নিজ কার্যালয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং হেড অব নিউজদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, ২৫ জুলাই মিরপুর-১০ মেট্রো রেলস্টেশন পরিদর্শন শেষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, ২৬ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ পরিদর্শন করেন, ২৭ জুলাই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শন করেন, ২৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন, ২৯ জুলাই ছাত্রলীগের নির্যাতিত নেত্রীদের সাক্ষাৎ, ৩০ জুলাই আহতদের দেখতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যান এবং জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রোস্টারের সাথে সাক্ষাৎ করেন, ৩১ জুলাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলা ট্রিবিউনের একটি সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে ১লা আগস্ট রাজধানীর খামারবাড়ির কেআইবি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগের স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও বক্তব্য রাখেন।
১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যটি দেশের প্রায় সকল গণমাধ্যমেই এসেছে। এমন কয়েকটি খবর দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
১লা আগস্ট কয়েকটি পোস্টে যমুনা টিভির একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফটোকার্ডে তারিখ দেওয়া হয়েছে ০১ আগস্ট,২০২৪। এই কার্ডে বলা হয়েছে, হঠাত্ করে হার্ট অ্যাাটাক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
কিন্তু যমুনা টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা গেল, ১লা আগস্ট তারিখে বিভিন্ন বিষয়ে তারা মোট ৩৬ টা ফড়োকার্ড প্রকাশ করলেও ‘প্রধানমন্ত্রী হার্ট এ্যাটাক করেছেন’ এমন খবরযুক্ত কোনো কার্ড প্রকাশ করেনি।
এছাড়া, যমুনা টিভির ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে এই আলোচিত ফন্টেও অমিল রয়েছে। অর্থাৎ এটা যে এডিটেড ফটোকার্ড,সেটা নিশ্চিত বোঝা যাচ্ছে।
সিদ্ধান্ত:
সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হার্ট অ্যাাটাক কিংবা মৃত্যুবরণ করার খবরটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।