সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতার স্টেডিয়ামে নামাজ পড়া হয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে ভাইরাল ভিডিওটি মূলত তিন বছর আগের ও রাশিয়ার কাজান এরিনা স্টেডিয়ামের। যে কারণে এমন দাবিগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করা হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একটি স্টেডিয়ামের মাঝে অসংখ্য মানুষ নামাজ পড়ছেন। আর একটু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের সিটে বড় করে ইংরেজিতে কাজান লেখা রয়েছে। এই বিষয়টিকে সূত্র ধরে গুগলে ও ইউটিউবে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড সার্চ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, “Namaz in Football Stadium, Masha ALLAH Thousands attended prayer in Kazan, Russia,” “Praying In Stadium | Namaz in Kazan Stadium Russia” শিরোনামে ভিডিওটি তিন বছর আগে প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে।
ভিডিওটি একাধিকবার দেখে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, বর্তমানে ভাইরাল ভিডিও ও তিন বছর আগে প্রকাশিত ভিডিও হুবহু এক।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে গুগুলে সন্ধান করে ভিন্ন ভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলোতে তাঁরাও এ বিষয়টি প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে, এটি কাতার বিশ্বকাপের কোনো স্টেডিয়ামের নামাজের ঘটনা নয় বরং তা তিন বছর আগে রাশিয়ার কাজান এরিনা স্টেডিয়ামের। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে।
11/23/2022
অর্থাৎ, বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্যান্য দেশেও ভিডিওটি উক্ত শিরোনামে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার কাজান এরিনা স্টেডিয়ামে নামাজের এই বিষয়টি নিয়ে ৮ আগস্ট ২০২২ তারিখে ইন্দোনেশিয়া ভিক্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। প্রতিবেদনটিতে তাঁরা দেখিয়েছেন, সেই সময়ে একই ভিডিও ভাইরাল করে দাবি করা হয়েছিল যে, খেলা চলাকালীন আজান হওয়ার কারণে খেলা স্থগিত করে খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা স্টেডিয়ামটিতে নামাজ পড়েছিলেন।
বিষয়টির উপরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তাঁরা জানাচ্ছেন, স্টেডিয়ামটিতে খেলা স্থগিত করে নামাজ পড়া হয়নি। বরং মুসলিমদের ইফতার অনুষ্ঠানে অসংখ্য মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ও ইফতার শেষে একত্রে তাঁরা নামাজ আদায় করেছিলেন। স্টেডিয়ামে অসংখ্য মানুষের নামাজের এই দৃশ্য দেখে মনে হয়েছিল এটি একটি প্রার্থনা ঘর।
অর্থাৎ কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামে নামাজ পড়ার দাবিতে যেই ভিডিও প্রচার করা হয়েছে তা আরও তিন বছর আগের রাশিয়ার কাজান স্টেডিয়ামের ভিডিও।
সঙ্গত কারণে এমন দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?