সম্প্রতি “এবার নিষেধাজ্ঞা দিল সজিব ওয়াজেদ জয় কে যুক্তরাষ্ট্র” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যার মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে বার্তা ছড়িয়েছে যে, সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিস্তর অনুসন্ধান করে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আমেরিকান স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটেও সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। সঙ্গত কারণে উক্ত ক্যাপশনটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” চিহ্নিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে ৯ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের যে ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, সেখানে মূলত ভিডিওটিতে “ব্রেকিং নিউজ এবার নি’ষেধাজ্ঞা দিল সজিব ওয়াজেদ জয় কে যুক্তরাষ্ট্র” ক্যাপশনটি ব্যবহার করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওটিতে প্রবাসী সাংবাদিক ও অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ড. রেজা কিবরিয়াকে আলোচনা করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে “হাসিনার কাঠালের রেসিপি” ক্যাপশনে ৩১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওটির ১৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড অংশে ইলিয়াস হোসেন ড. রেজা কিবরিয়ার কাছে আমেরিকার ফরেন পলিসি ও সজীব জয়ের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে প্রশ্ন করেন, ড. রেজা কিবরিয়া বলেন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। ভিডিওটি দেখুন এখানে।
বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব জয়ের সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে সূত্র ধরে ইলিয়াস হোসেন বলেন যে, এ ধরণের মন্তব্যের কারণে আমেরিকা জয়কে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কাছে অপ্রমাণিত সোর্সের দ্বারা এমন একটি তথ্য এসেছে, কেননা এমন মন্তব্য আমেরিকার ফরেন পলিসির বিরুদ্ধে যায়। তবে ড. রেজা কিবরিয়া জানান, যে কোনো কঠিন মন্তব্য আমেরিকায় বসে আমেরিকার বিরুদ্ধে করা যায়।
২১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখের আলোচনাটির ক্ষুদ্রাংশ “ব্রেকিং নিউজ এবার নি’ষেধাজ্ঞা দিল সজিব ওয়াজেদ জয় কে যুক্তরাষ্ট্র” ক্যাপশনে প্রকাশিত হবার পরে ফেসবুকে তা ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
প্রসঙ্গত, ১০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে “গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার” অভিযোগে বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নানবিধ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে। ৯ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখেও যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তবে সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। বিজ্ঞপ্তিটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে। তবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়া বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কোনো তথ্য নেই এবং যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি বা বিবৃতি নেই।
যথার্থ কারণে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক সকল দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?