ফেসবুকে একটি ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে যে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে যে পুলিশ সদস্য দেখাশোনা করতেন, তার মৃত্যুর পর সে পুলিশ সদস্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মারার যাবার পরে কোনো পুলিশ সদস্য চাকুরি ছেড়েছেন — এই মর্মে মূলধারার সংবাদমাধ্যমে কোনো খবর আসেনি। দাবিটির সপক্ষে যে ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, তা মূলত কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের বিদায় অনুষ্ঠানের সময়ে ধারণ করা হয়। ভাইরাল ভিডিওর ক্যাপশনে যা প্রকাশ পেয়েছে, তার সাথে মূল ভিডিওর কোনো মিল নেই। সে কারণে এমন দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করছে।
ভাইরাল পোস্টটির উৎপত্তি জানতে একাধিক কী-ওয়ার্ড ধরে ইউটিউবে সার্চ করা হয়। সেখান থেকে “অশ্রুশিক্ত চোখে বিদায় নিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার” শিরোনামে আপলোড হওয়া একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে ভাইরাল ভিডিওর হুবহু মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন এখানে। পরবর্তীতে গুগলে সার্চ করলে আরও বিস্তারিত জানা যায়। মূলত, কুষ্টিয়া জেলা থেকে হাইওয়ে পুলিশে বদলী হন পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম। বিদায়ের সময়ে সেদিন তিনি সহকর্মীদের কাছে যেয়ে সান্ত্বনা দিয়েছেন, দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশংসা করেছেন। এ বিদায় অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে বিষয়টি পোস্ট করা হয়। দেখুন এখানে।
উল্লেখ্য যে, ১৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে থেকে বিষয়টি আপলোড করা হয়েছে। ১৬ জুলাই ২০২৩ তারিখে বিষয়টি ইউটিউবে আপলোড হয়েছে। অপরদিকে ১৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয়েছে।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীকে শোক প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তবে তার মৃত্যুর পরে কোনো পুলিশ সদস্য চাকুরি থেকে পদত্যাগ করেছেন এমনটা কোনো সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়নি।
যেহেতু ভাইরাল ভিডিওর সাথে শিরোনামের দাবির কোনো সামঞ্জস্য নেই, তাই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পরে পুলিশ সদস্যের চাকুরি ছাড়ার সকল দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।