পুরুষ অথবা নারী – কে বেশি বুদ্ধিমান?

101
পুরুষ অথবা নারী – কে বেশি বুদ্ধিমান?
পুরুষ অথবা নারী – কে বেশি বুদ্ধিমান?

Published on: [post_published]

Fact-File

 

আদিকাল থেকে চলে আসা একটি ধারণা হচ্ছে, পুরুষ নারীর তুলনায় বেশি বুদ্ধিমান। এখন আবার এমন দাবিও দেখা যাচ্ছে যেখানে নারীকে পুরুষের তুলনায় বেশি বুদ্ধিমান বলা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, না! বায়োলজ্যিকাল সেক্স বা লিঙ্গের সাথে মানুষের বুদ্ধিমান হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এর মধ্যে কোনটি সঠিক? বিজ্ঞানীদেরই বা এ বিষয়ে কি মতামত? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে এই ফ্যাক্টফাইলে। ফ্যাক্টফাইলটি লিখেছেন শুভাশীষ দীপ

 

বুদ্ধির বিষয়টি যতটা সহজ মনে হয় ঠিক ততটাই জটিল। তাই বুদ্ধিমত্তার সাথে পুরুষ বা নারী হওয়ার আলাদা কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা বুঝতে হলে একটু শুরু থেকে শুরু করা দরকার। প্রথমে জানা জরুরী বুদ্ধিমত্তা বিষয়টি কি? এবং কিভাবে কারোও বুদ্ধি যাচাই করা যায়।

(উল্লেখ্য, পশু-পাখির বুদ্ধিমত্তা কিংবা আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স নয়, বুদ্ধিমত্তা বলতে এখানে শুধুমাত্র মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে বুঝানো হয়েছে)

 

বুদ্ধিমত্তা কি?

বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞায়ন একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়। মনোবিজ্ঞান থেকে স্নায়ুবিজ্ঞান — সবাই বিভিন্ন গবেষণার আলোকে বিষয়টিকে সংজ্ঞায়িত করছে। তবে এখনো সর্বজনগ্রাহ্য সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সব ব্যাখ্যারই কিছু না কিছু সমালোচনা দেখতে পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করার সাথে সাথে ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা দেখতে পাওয়া যাবে। একেক জায়গায় একেকভাবে বিষয়টিকে বুঝানো হচ্ছে। তবে মোটাদাগে বলা যায়, কোনো কিছু শেখা, বুঝতে পারা কিংবা নতুন কিছু চেষ্টা করার ক্ষমতাই বুদ্ধিমত্তা।

বিভিন্ন গবেষক বা লেখক বিভিন্নভাবে এ বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন। ইংরেজ মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যানের “টু ফ্যাক্টর থিওরি অব ইন্টিলিজেন্স” এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ১৯০৪ সালে তিনি “ফ্যাক্টর এনালাইসিস” নামে একটি পরিসংখ্যান পদ্ধতি তুলে ধরেন। যেখানে তিনি কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে (যেমন, শব্দ, ওজন ও রঙ, দিক নির্দেশনা এবং গণিত) কোনো ব্যক্তি কতটা দক্ষ সেটি বিশ্লেষণ করেন। তার এ পদ্ধতি থেকে একটি বিষয় সামনে আসে যে, কোনো ব্যক্তি যদি এর কোনো একটি বিষয়ে দক্ষ হয় তবে সে মোটামুটি বাকি বিষয়গুলোতেও পটু হয়। এর ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি সুনির্দিষ্ট একটি “ফ্যাক্টর” এর ধারণা দেন, যার উপর নির্ভর করে আমাদের বুদ্ধিমত্তা প্রভাবিত হয়। এটিকে তিনি “জি ফ্যাক্টর” বা জেনারেল ইন্টিলিজেন্স বলছেন।

এই থিওরির অন্য একটি ফ্যাক্টরকে তিনি বলছেন “এস ফ্যাক্টর”। এর দ্বারা মানুষের কোনো নির্দিষ্ট একটি কাজে দক্ষ থাকার ক্ষমতাকে বুঝাচ্ছেন যা মানুষভেদে ভিন্ন হতে পারে।

অর্থ্যাৎ, স্পিয়ারম্যানের মতে, কারো বুদ্ধিমত্তা বোঝা যাবে দুইভাবে। প্রথম ফ্যাক্টরটি সাধারণ বুদ্ধিমত্তা যা সবার মধ্যেই কমবেশি থাকে। কিন্তু দ্বিতীয় ফ্যাক্টরটি ব্যাক্তিভেদে বেশ খানিকটা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

 

বুদ্ধিমত্তা মাপার সর্বজনগ্রাহ্য কোনো একক পদ্ধতি কি আছে?

বেশ অনেকগুলো পদ্ধতিতেই মানুষের বুদ্ধিমত্তা মাপা হয়। যেমন আইকিউ টেস্ট, নিউরোসাইকোলজিক্যাল টেস্ট, এবিলিটি টেস্ট ইত্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আইকিউ টেস্ট। সবাই আমরা কমবেশি এই পরীক্ষার সাথে পরিচিত। আইকিউ এর পূর্ণরূপ ইন্টিলিজেন্স কোশেন্ট (Intelligent Quotient)। সহজভাবে বললে, এর মাধ্যমে আমাদের কগনিটিভ এবিলিটি বা বোধশক্তি পরীক্ষা করা হয়। অনেকগুলো আইকিউ টেস্ট রয়েছে তবে এর মধ্যে “বিনেট-সাইমন” টেস্ট বেশ আলোচিত। ফ্রেঞ্চ মনোবিজ্ঞানী আলফ্রেড বিনেট এই আইকিইউ টেস্টটি উদ্ভাবন করেন। তার সাথে থিওডোর সাইমন নামে আরেকজন মনোবিজ্ঞানীও এতে কাজ করেন। তাই এই টেস্টের নামকরণ করা হয় বিনেট-সাইমন টেস্ট।

 

এছাড়াও আরোও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য আইকিউ টেস্ট আছে। যেমন:

  • ইউনিভার্সাল ননভার্বাল ইন্টিলিজেন্স (Universal Nonverbal Intelligence)
  • ডিফরেন্ট এবিলিটি টেস্ট (Differential Ability Scales)
  • পিবডি ইন্ডিভিজুয়াল এচিভমেন্ট টেস্ট (Peabody Individual Achievement Test)
  • ওয়েচস্লার ইন্ডিভিজুয়াল এচিভমেন্ট টেস্ট (Wechsler Individual Achievement Test)
  • ওয়েচস্লার এডাল্ট ইন্টিলিজেন্স টেস্ট (Wechsler Adult Intelligence Scale)
  • উডকোক জনসন থ্রি টেস্টস অফ কগনিটিভ ডিজএবিলিটিস (Woodcock Johnson III Tests of Cognitive Disabilities)

পিয়ার রিভিউড জার্নাল ‘আমেরিকান সাইকোলজিস্ট’ এ , “Intelligence: Knowns and Unknowns” শিরোনামে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে উক্ত টেস্টগুলোর মধ্যে ওয়েচস্লার এবং বিনেট-সাইমন টেস্টকে জেনারেল ইন্টিলিজেন্স বুঝার জন্য ভালো কার্যকরী বলে দাবি করা হয়েছে।

 

তবে জেনারেল ইন্টিলিজেন্সের বাইরে গিয়ে মাল্টিপল ইন্টিলিজেন্সের ধারণা দিয়েছেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মনোবিজ্ঞানী হাওয়ার্ড গার্ডনার (Howard Gardner)। তিনি আটটি ভিন্ন বিষয়ে বুদ্ধিমত্তাকে বিচার করার একটি ধারণা দি্যেছেন। এর মধ্যে শব্দ, যুক্তি, মিউজিক সহ নিম্নোক্ত বিভিন্ন বিষয় স্থান পেয়েছে।

মাল্টিপল ইন্টিলিজেন্স নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন এখানে

অন্যদিকে, আইকিউ টেস্টগুলোর সীমাবদ্ধতা নিয়েও রয়েছে অনেক যুক্তিতর্ক। এর মধ্যে স্টার্নবার্গ তিনটি সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেছেন-

১। এই পরীক্ষাগুলো সৃজনশীলতা পরিমাপের ক্ষেত্রে ব্যর্থ।

২। এর মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তার যে ব্যবহারিক দিক আছে সেগুলো আমলে নেয়া হয় না।

৩। যেহেতু এখানে সময়সীমার একটি বিষয় থাকে তাই তার মতে বুদ্ধিকে গতির সাথে ভুলভাবে তুলনা করা হয়।

 

বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞা এবং এর যাচাই পদ্ধতি আলোচনার প্রেক্ষিতে এটি পরিষ্কার যে, বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞা কিংবা এর পরীক্ষা পদ্ধতি একাধিক। এমন কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা পরীক্ষা পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া যায়নি যেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। এ থেকে একটি ধারণা পাওয়া যায় যে, যেহেতু পরীক্ষা পদ্ধতি অনেক তাই এর ফলাফলও হবে অনেক। অর্থ্যাৎ, বুদ্ধিমত্তা মাপার ক্ষেত্রে একেক পরীক্ষা একেক ধরনের ফলাফল দিতে পারে।

 

এখন আসা যাক মূল আলোচনায়। অর্থ্যাৎ, বুদ্ধি কার বেশি বা কম। এ প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে নারী বা পুরুষের মস্তিষ্কের গঠন বুঝা দরকার।

 

নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের গঠনগত বৈশিষ্ট্য

(উল্লেখ্য, এখানে নারী এবং পুরুষ বলতে বায়োলজ্যিকাল সেক্স বুঝানো হয়েছে)

মস্তিষ্কের এনাটমি বা গঠনপ্রণালীর ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কে কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এমন অনেক গবেষণা দেখিয়েছে যে, পুরুষের মস্তিষ্ক নারীর তুলনায় কিছুটা বড়। এ বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল ২০ বছরের বেশি সময় ধরে একটি গবেষণা পর্যালোচনা করে। সেখানে একদম শিশুকালের মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে ৮০ বছর বয়সী মস্তিষ্ককেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়। তাদের এই গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষের মস্তিষ্ক নারীর তুলনায় গড়ে ৮-১০ শতাংশ বড় হয়।

মস্তিষ্কের ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে পার্থক্য তার একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা সেখানে দেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ রিপোর্টটি পড়ুন এখানে

 

এখন তাহলে প্রশ্ন আসে, মস্তিষ্ক বড় হলে বুদ্ধিও কি বেশি হয়?

এটিও খুব বিতর্কিত একটি বিষয়। এ নিয়ে দ্বৈত মতামত দেখতে পাওয়া যায়। কেউ কেউ সরাসরি বলছেন মস্তিষ্ক বড় হওয়ার সাথে বুদ্ধিমত্তার কোনো সম্পর্ক নেই। আবার কেউ কেউ দেখানোর চেষ্টা করেছেন মস্তিষ্কের সাইজের উপর কিভাবে বুদ্ধিমত্তা নির্ভর করে। তবে সেই মাপকাঠিও সহজ নয়। কেননা সহজভাবে চিন্তা করলে, মানুষের থেকেও বড় সাইজের মস্তিষ্ক পৃথিবীতে আছে। যেমন- তিমি কিংবা হাতি। কিন্তু তাদেরকে মানুষের থেকে বুদ্ধিমান বলা হয় না। এছাড়া আলবার্ট আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের সাথে তুলনা করে দেখা গিয়েছে, মোটের উপর আইনস্টাইনের মস্তিষ্কও সাধারণ সাইজের ছিলো। তবে কিছুটা ভিন্নতা থাকায় সেগুলোকে অনেকেই তার বুদ্ধিমত্তার কারণ হিসেবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

অর্থ্যাৎ, সরাসরি এমন কোনো প্রমাণ নেই যে মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন তার বুদ্ধিমত্তা নির্ধারণ করে। আবার এটিও নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে, এর সাইজের সাথে বুদ্ধিমত্তার একেবারেই কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য উইকিপিডিয়া থেকে পাওয়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত একটি বই পড়ুন এখানে

তাহলে কে বেশি বুদ্ধিমান? নারী না কি পুরুষ?

এমন অনেক গবেষণা পাওয়া যায় যেখানে পুরুষের আইকিউ নারীর তুলনায় বেশি দেখা যায়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন প্রকাশিত একটি গবেষনায় দেখা যাচ্ছে, পুরুষের আইকিউ গড়ে ৩-৫ পয়েন্ট বেশি নারীদের তুলনায়। অর্থ্যাৎ, কেউ যদি দেখাতে চায় যে পুরুষ নারীর চেয়ে বুদ্ধিমান – তবে সে এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে প্রমাণ করতে পারে।

আবার, ফোর্বস প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দেখা যায় নারীরা ইমোশনাল ইন্টিলিজেন্সের দিকে পুরুষের থেকে অনেক এগিয়ে। ট্যালেন্টস্মার্ট নাম একটি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষায় এমনটা উঠে এসেছে বলে জানা যায়। এখন এর মাধ্যমে কেউ বলতেই পারে যে নারীরা পুরুষের থেকে স্মার্ট।

কিন্তু বিষয়টি এতটাও সরল নয়। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গবেষণাপত্র এবং বইয়ে ঠিক এর বিপরীত তথ্য মিলেছে। যা থেকে লিঙ্গভেদে বুদ্ধিমত্তায় তেমন কোনো প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় না বলে জানা যায়। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ উইমেন এন্ড জেন্ডার বইয়ে পরিষ্কারভাবেই বলা হচ্ছে, জেনারেল ইন্টিলিজেন্সের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে কোনো তফাৎ দেখতে পাওয়া যায় না।

মনোবিজ্ঞানী আর্ল হান্ট (Earl Hunt) এর হিউম্যান ইন্টিলিজেন্স বইয়ের সূত্র ধরে উইকিপিডিয়ার এই পেজ থেকে জানা যায়, অনেক মনোবিজ্ঞানীরাই মনে করেন যে পুরুষ বা নারীর সাথে বুদ্ধিমত্তার কোনো সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে নারী বা পুরুষের বুদ্ধিমত্তার তারতম্য হয়ে থাকে ঠিকই তবে তা অতি সামান্য। উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়, নারীরা বাচনিক ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভালো দক্ষ হয় অন্যদিকে বস্তুর সাপেক্ষে দূরত্ব বোঝার (Spatial Ability) ক্ষেত্রে আবার পুরুষদের দক্ষতা বেশি।

বিবিসি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে স্নায়ুবিজ্ঞানী জিনা রিপন (Gina Rippon) এর একটি সাক্ষাৎকার থেকেও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় যে, লিঙ্গভেদে মানুষের বুদ্ধিমত্তার কোনো সম্পর্ক নেই। স্নায়ুবিজ্ঞান এমন চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো দেয় নি। এটি একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক ধারণা মাত্র।

সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখুন এখানে

 

অর্থ্যাৎ, এটি যেমন শতভাগ নিশ্চয়তা নিয়ে বলা যাবে না যে নারী বা পুরুষ হওয়ার সাথে বুদ্ধিমান হওয়া না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই ঠিক তেমনি এটিও বলা যাবে না যে নারী বা পুরুষ কেউ কারোও থেকে বেশি বুদ্ধিমান। কারণ এর প্রত্যেকটি গবেষণার পিছনেই রয়েছে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা। যেসব ফেসবুক পোস্ট থেকে কোনো ধরণের বিস্তারিত আলোকপাত না করে এক কথায় বলে দিচ্ছে যে নারী বা পুরুষের বুদ্ধি একে অপরের থেকে কম বা বেশি সেগুলো বিভ্রান্তিকর। কারণ এমন নিশ্চিত কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

সাধারণ মানুষ কি ভাবছে?

বুদ্ধিমত্তার সাথে নারী বা পুরুষ হওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে কি না এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ কি ভাবে এ নিয়ে একটি জরিপ করে আমেরিকান সাইকোলজিস্ট এসোসিয়েশন। ১৮ জুলাই, ২০১৯ এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয় আমেরিকান সাইকোলজিস্ট জার্নালে। এর আগে ১৯৪৬ সালেও একই জরিপ করা হয়েছিলো। সেখানে দেখা যায়, জরিপে অংশ নেয়া ৩৫ শতাংশ মানুষ মনে করে নারী এবং পুরুষ সমানভাবে বুদ্ধিমান। বাকিদের বেশিরভাগেরই মতামত ছিলো পুরুষেরা নারীর তুলনায় বেশি বুদ্ধিমান। কিন্তু অবাক করার মত ফলাফল দেখা যায় ২০১৮ এর এই জরিপে। জরিপে অংশ নেয়া ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করে যে পুরুষ এবং নারী সমানভাবে বুদ্ধিমান। বাকি ১৪ শতাংশের মধ্যে ৯ শতাংশ মানুষ মনে করছে নারীরা পুরুষের থেকে বেশি বুদ্ধিমান এবং বাকি ৫ শতাংশ মনে করছে পুরুষেরা বেশি বুদ্ধিমান।

এ নিয়ে দুইটি রিপোর্ট পড়ুন এখানে এবং এখানে

 

সম্পূর্ণ লেখাটিকে এক কথায় বললে, নারী না পুরুষ কে বেশি বুদ্ধিমান- এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া এখনো সম্ভব হয়নি। নারী এবং পুরুষের এনাটমি ভিন্ন, এমনকি তাদের সামাজিক অবস্থানও অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন। কোনো বিষয়ে নারীর দক্ষতা বেশি, আবার কোনো ক্ষেত্রে পুরুষের বেশি। এছাড়া যেখানে বুদ্ধির পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়েই অনেক তর্ক-বিতর্ক রয়েছে সেখানে সেসব পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে অবিতর্কিত কোনো সিদ্ধান্তে পৌছানো খুবই মুশকিল। স্নায়ুবিজ্ঞান কিংবা মনোবিজ্ঞান কেউ এখন পর্যন্ত শতভাগ নিশ্চয়তা্র সাথে নারী বা পুরুষের বুদ্ধির পক্ষে সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিতে পারেনি।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh