যা দাবি করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নিয়েছেন এবং ২০২৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ভোট দেবে।
যা ঘটেছে: বাংলাদেশের মূলধারার কোন সংবাদমাধ্যমে “শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নিয়েছেন” – এমন কোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং, প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের নেতাকর্মীরা বরাবরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া, বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটিকে বিলুপ্ত করা হয়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গুগলে অনুসন্ধান করি। আমাদের অনুসন্ধানে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নিয়েছেন – এ সম্পর্কিত কোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একটি অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি মনে করছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তবে, বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করছে। দলটির সভাপতি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিনিয়ত বলে আসছেন আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে তার কথা হয়নি এবং এই নিয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসাও করেনি।
এদিকে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, আওয়ামীলীগের একটি শরীক দল, এর সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক। তাছাড়া, বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে এবং সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। তাই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের সুযোগ নেই।”
Image: Excerpt from the Daily Star Bangla
এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি ২০১১ সনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে।
অতএব, এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নিয়েছেন বলে যে দাবিটি করা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়।
সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।