গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে, সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন। তাছাড়া ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে হাসিনা আর প্রকাশ্যে আসেননি বা দেখা যায় নি। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “ভারতে শেখ হাসিনার ইন্টারভিউ নেয়া হচ্ছে, হাসিনা ফিরে আসবে” এমন তথ্যে কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে নয় বরং দুই যুগের পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল ভিডিওগুলো বিভ্রান্তিকর।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, ও এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
আলোচিত ভিডিওটি অনুসন্ধান করার জন্য শুরুতেই ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে “Immigrant Channel” নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ১৬ মে, ২০০৭ সালের “Sheikh Hasina made exclusive comments in London before her arrest” শিরোনামের একটি আপলোড করা ভিডিও পাওয়া যায়। আলোচিত ভিডিওটির সঙ্গে এই ভিডিওটির ১ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের অংশটির সঙ্গে হুবহু মিল পাওয়া যায়।
ভিডিওটি থেকে জানা যায়, এটি ১ মে, ২০০৭ সালের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনার বক্তব্যের ভিডিও। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, দেশে গেলে অন্যায়ভাবে আপনাকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আপনার বক্তব্য কি হবে? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের উদ্দেশ্যে আমার একটাই কথা, আমি জনগণের জন্য রাজনীতি করি, জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করি, জনগণের জন্য যেকোনো কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি। জনগণের কাছেই বিচার চাইব।”
তাছাড়া, Tanvir Chowdhury নামক আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকেও ১৭ জুলাই, ২০০৭ এ এই একই ভিডিও আপলোড করা হয়েছিল।
সুতরাং, নিশ্চিতভাবেই দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০০৭ সালের ভিন্ন ঘটনার। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল ভিডিওগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
No Factcheck schema data available.
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh