গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ এ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছেন, শেখ হাসিনাকে কিছুদিনের জন্য ভারতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি কোথায় যাবেন, সে বিষয়ে একাধিক অনুমান চলমান রয়েছে । প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ব্রিটেনের কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্রিটেন সরকার তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া এই ঘটনা এবং তথ্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে “শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে চলে যাচ্ছেন” এই ক্যাপশনে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ভিডিওটি মূলত ৬ – ৮ নভেম্বর ২০২৩ এ নারী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে শেখ হাসিনার তিন দিনের সরকারি সফরের ভিডিও, যা সৌদি আরব এ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এসকল অসংগতি বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত দাবিকে বিভ্রান্তিকর বলে সাব্যস্ত করেছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ভিডিওতে যে পুলিশ সদস্যদের দেখা যাচ্ছে তাদের সাথে ভারতের সামরিক কোন বাহিনীর পোশাক এর মিল নেই। উল্লেখ্য যে, তাদের পোশাকে আরবি ভাষার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে জানা যায় যে এটি সৌদি আরবের সেনাসদস্যদের পোশাক। ঢাকা পোস্ট এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিও এর সাথে আমাদের আলোচিত ভিডিওটির বেশ মিল পাওয়া গেছে। ভিডিওটি দেখুন এখানে।
পরবর্তীতে, একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ঢাকা পোস্ট এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ৬ – ৮ নভেম্বর ২০২৩ সালের, যখন শেখ হাসিনা সৌদি আরব গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে। সেই সময়ে তিনি তার ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে ৬ নভেম্বর মক্কায় পবিত্র ওমরাহ হজ্জ পালন করেন। এটিকেই মিথ্যা শিরোনামে সাম্প্রতিক ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে।
তাছাড়া, ‘শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে চলে গেছেন’ এই দাবিটির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
উক্ত ভিডিওটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধাম “আজতক” এর একটি ফ্যাক্ট চেক রিপোর্ট তাদের ওয়েবসাইট এ প্রকাশ পেয়েছে।
অতএব, সার্বিক তথ্য উপাত্ত বিবেচনায় ভাইরাল দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় নি।তাই উক্ত দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘’বিভ্রান্তিকর’’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।