সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “৬০০ কোটি টাকার তেলবাহী বাংলাদেশি জাহাজডুবি!!জাহাজে তেল লোড দেওয়ার সাথে সাথেই ফাটল ধরে” ক্যাপশনে জাহাজ ডুবে যাচ্ছে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মূলত ভিডিওটি ইন্দোনেশিয়ার ২০১৫ সালের একটি ঘটনার। ৩ মিনিটের ঐ ভিডিওটিতে দেখা যায় একটি জাহাজ তীরের কাছে ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে এবং জাহাজে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করা হচ্ছে। ভিডিওটি যিনি করেছেন তিনি ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় ঘটনাটি ব্যাখ্যা করছিলেন। সেই ভিডিওটিকে বর্তমানে বাংলাদেশের তেলবাহী জাহাজডুবি বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে।
এরকম মিথ্যা ক্যাপশনে ফেসবুকে প্রকাশিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
ভাইরাল ভিডিওটি ইনভিড এর মাধ্যমে খুঁজে দেখা হলে ইউটিউবে ইন্দোনেশিয়ার ঐ জাহাজডুবির ১০ মিনিটের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেই ভিডিওটি থেকেই ৩ মিনিটের একটি অংশ বর্তমানে ভূয়া ক্যাপশনে প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ এবং ইয়ানডেক্স এর মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হলে দেখা যায় সেটি আসলে ইন্দোনেশিয়ার ২০১৫ সালের একটি ভিডিও। আরও অনুসন্ধানে এনবিসি নিউজ এর আন্তর্জাতিক শাখায় এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। ভাইরাল ভিডিও এর জাহাজটি এবং সেই সংবাদে উল্লিখিত জাহাজটি একই। মূলত এটি ছিল একটি ফেরি। ফেরিডুবির ঘটনাটি বন্দরের কাছাকাছি হওয়াতে ভিডিওটি যে এই ঘটনারই তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এনবিসি নিউজের সংবাদটিতে বলা হয়েছে কে এম উইহান সেজাহতেরা নামক ওই ফেরীটি ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার সুরাবায়া এর তানজুং পেরাক পোর্ট ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ এ নাটকীয়ভাবে ডুবতে শুরু করে। এ ঘটনায় ১৭৫ জন যাত্রী এবং কর্মীদের নিরাপদে উদ্ধার করা হয় এবং কেউ হতাহত হয় নি।
অর্থাৎ ফেসবুকে ভাইরাল ৬০০ কোটি টাকার বাংলাদেশি জাহাজডুবির ভিডিওটি আসলে ইন্দোনেশিয়ার ২০১৫ সালের একটি জাহাজডুবির ভিডিও। সুতরাং ফ্যাক্টওয়াচ এই ক্যাপশনে প্রচারিত সকল ভিডিওগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?