যা দাবি করা হচ্ছেঃ ব্যারিস্টার সুমনকে চড় মারায় খেপে গেলেন ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলী
অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ দাবিটি মিথ্যা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, ক্রিকেটার এমপি সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সুমনকে থাপ্পড় মেরেছেন এবং সে কারণে ভারতের ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী সাকিবকে “বেয়াদব” বলেছেন এবং তার উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি করেছেন। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভিডিওটির কোনো দাবিই সঠিক নয় এবং মূলধারার গনমাধ্যমে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে চিহ্নিত করছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে ব্যবহৃত ফুটেজ ও ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খুঁজে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, ফুটেজ ও ছবিগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে নিয়ে জোড়া লাগানো। তাছাড়া সৌরভ গাঙ্গুলীর ভিডিওটি ভিন্ন একটি সংবাদ সম্মেলনের।
“Oneindia Bengali” নামক একটি ফেসবুক পোর্টালে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে সৌরভ গাঙ্গুলী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবের এক পর্যায়ে বিরাট কোহলিকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেন। যেখানে সৌরভ বলছেন, “He will not score, but he’s a special talent” এবং এই উক্তিটিকেই ভাইরাল ভিডিওতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
পরবর্তী অনুসন্ধানে সৌরভ গাঙ্গুলীর সাক্ষাত্কারটি ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়। ঘটনাটির সময়কাল ছিলো ১২ জানুয়ারি, ২০২৩। অর্থাৎ, এটি প্রায় এক বছর আগের ঘটনা।
এ পর্যায়ে সাকিব ও ব্যারিস্টার সুমনের দ্বন্দ্বটির বিষয়ে খোঁজ করি আমরা। অনুসন্ধানে সাকিব ও সুমনের পূর্বের দ্বন্দ্বের কিছু সংবাদ ও ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে সাকিব ও সুমনের দ্বন্দ্বের প্রমাণ পাওয়া গেলেও সেখানে কোনো হাতাহাতি বা শারীরিক লাঞ্ছনার প্রমাণ মেলে নি । তবে ১৬ মার্চ, ২০২৩ এ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায় যে, ব্যারিস্টার সুমন দাবি করেন সাকিব তাকে মারতে এসেছিলেন।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সাকিব আল হাসান (মাগুরা-১) ও ব্যারিস্টার সুমন (হবিগঞ্জ-৪) উভয়েই তাদের নিজ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং গনভবনে শপথ গ্রহণ করেন। পূর্বের রেশ ধরে সাকিব ও ব্যারিস্টার সুমনের মধ্যে কোন্দলের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।
তদুপরি, ভাইরাল ভিডিওতে থাকা সৌরভ গাঙ্গুলীর ফুটেজটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রসঙ্গের। এর সাথে সাকিব এবং ব্যারিস্টার সুমনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল ভিডিওর এই দাবিটি ভিত্তিহীন।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।