সম্প্রতি “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিচ্ছেদ! | ভারতের গোয়েন্দাদের আটক করছে বাংলাদেশ!” ক্যাপশনে ১৬ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে। মূলত ভিডিওটি কমপক্ষে ৯ মাস পুরনো। উক্ত ভিডিওতে উল্লেখিত পদ্মা সেতু এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ভারতীয় আটকের ঘটনা এবং দুই চীনা প্রকৌশলীর হত্যা এবং নিখোঁজ হবার ঘটনাটি যথাক্রমে ২০২০ ও ২০২১ সালের। পুরনো ভিডিও নতুন করে প্রচারের কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।
ফেসবুকে ইলিয়াস হোসাইন নামের বেশ কয়েকটি পেজ থেকে উক্ত ক্যাপশনে প্রকাশিত ভিডিওটি দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ক্যাপশন ধরে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, একই শিরোনামে ১০ আগস্ট ২০২১ তারিখে BD Update News নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিওটি প্রকাশিত হয়েছিল। ভিডিওটি দেখুন এখানে।
ভাইরাল ভিডিওটির ৩৪ সেকেন্ডে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কর্মরত চীনা নাগরিকদের একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে। এ বিষয়ে যে স্ক্রিনশটটি দেখানো হয়েছে ভিডিওতে তা মূলত ৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখের ঘটনা। সেদিন পিরোজপুরে লাও ফান (৫৮) নামে চীনের এক নাগরিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছিল এবং উক্ত ঘটনায় পরবর্তীতে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছিল পুলিশ।
ভিডিওটির ৪৯ সেকেন্ডে “চীনা প্রকৌশলীকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক” শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে। ২৫ এপ্রিল ২০২১ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রূপগঞ্জে চীনা বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী লিয়াং হোর (৪৫) মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, তাকে শ্বাসরোধে করে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।
ভাইরাল ভিডিওর ১ মিনিট ০৫ সেকেন্ডে বলা হয়েছে, চীনা প্রকৌশলী জো জিয়ান চেং কে গুম করেছে ভারতীয় বাহিনী। মূলত গতবছর ২২ জুন রাত ৮টায় মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা সেতুর নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক খুঁটির বার্জ থেকে নিখোঁজ হন চীনা প্রকৌশলী জো জিয়ান চেং। তার খোঁজ মিলতে অর্থ পুরষ্কার ঘোষণা করা হলেও কোনো সন্ধান মেলেনি তার এবং নিখোঁজ হবার কারণও পরবর্তীতে জানা যায় নি।
উক্ত ভিডিওটির ১ মিনিট ৪১ সেকেন্ডে হাফ ডজন ভারতীয় গোয়েন্দাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক আটকের কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, পদ্মা বহুমুখী সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত থেকে গতবছর ০৬ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছিল অনুপ্রবেশের অভিযোগে।
উক্ত আলোচনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে ভাইরাল ভিডিওটিতে উল্লেখিত কোনো ঘটনাই সাম্প্রতিক নয়। পুরনো তথ্য এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সংবলিত ভিডিও নতুন করে প্রচার করায় তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে বিবেচনায়, ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?