একটানা ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলের কারণে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে। বিবিসি বাংলার দাবি অনুযায়ী, অতিবৃষ্টির মধ্যে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত । এর ফলে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এবং বাংলাদেশের আটটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়ানক অবনতি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ‘ডম্বুর গেট এর বর্তমান অবস্থা’ দাবিতে অনলাইনে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে,যা প্রকৃতপক্ষে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীসাইলাম বাঁধের দৃশ্য।
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, এই দৃশ্যটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের কৃষ্ণ নদীর উপরে নির্মিত শ্রীসাইলাম (Srisailam) বাঁধের দৃশ্য। ১৯৬০ সালে এই প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরু হয় এবং ১৯৮১ সালে এটি সমাপ্ত হয়। এটি ৫১২ মিটার লম্বা এবং ১৪৫ মিটার উচু এবং এই বাধে ১২টি গেট রয়েছে। এখানকার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৭৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব ।
শ্রীসাইলাইম বাঁধের পানিপ্রবাহের কিছু দৃশ্য ইউটিউবে নিকট অতীতেও আপলোড করা হয়েছিল। এমন কয়েকটি ভিডিও দেখতে পাবেন এখানে, এখানে, এখানে ,এখানে।
ত্রিপুরা ইনফো ওয়েতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, ডম্বুর হ্রদের অদূরে গোমতী নদীর উপরে ‘তীর্থমুখ’ নামক স্থানে নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সক্ষমতা ৮.৫ মেগাওয়াট। এই বাঁধের দৈর্ঘ্য বা উচ্চতা সম্পর্কে কিছু জানা না গেলেও, প্রকাশিত ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে যে এই বাঁধে ৩ টি গেট রয়েছে।
ত্রিপুরার নাগরিক সৌরভ চাকমা এর ফেসবুক একাউন্টে শুষ্ক অবস্থায় এই বাধের একটি ছবি পাওয়া গেল। এখানেও ৩ টি গেট দেখা যাচ্ছে।
এই বাঁধের পুরনো কিছু ফুটেজ ইউটিউবে ব্যক্তি মালিকানাধীন একাউন্টে দেখা যাচ্ছে (যেমন – এখানে, এখানে)। এসবের কোনোটার সাথেই বর্তমানে ছড়িয়ে পড়া প্রমত্তা জলপ্রবাহটির কোনো মিল নাই।
সঙ্গত কারণে, ফেসবুকে ডুম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক প্রজেক্টের নামে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।