যা দাবি করা হচ্ছে : এখন থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
যা পাওয়া যাচ্ছে : গতকাল ৫ই সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ বলেছিলেন, পর্যটক আগমন সীমিত করার পাশাপাশি সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতির বিষয়টিও কার্যকর করার পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে এখনই এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি। গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘সেন্ট মার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে’ শীর্ষক খবরটি সত্য নয় বলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি এর ওয়েবসাইটে ৫ই সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্লাস্টিক বন্ধে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পাইলট প্রকল্প নিয়েছে সরকার : পরিবেশ অধিদপ্তর শীর্ষক সংবাদ থেকে জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ বলেছেন, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাতে নিয়েছে সরকার। দ্বীপটির পরিবেশ রক্ষায় পর্যটক আগমন সীমিত করার পাশাপাশি পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতির বিষয়টিও কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ খবর থেকে দেখা যাচ্ছে, রেজিস্ট্রনের বিষয়টি কেবলমাত্র ‘পরিকল্পনা’ পর্যায়ে রয়েছে। এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা আসেনি।
Ministry of Environment, Forest and Climate Change, Bangladesh এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৪ মিনিটে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত খবরটিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সিনিয়র তথ্য অফিসার ‘দিপংকর বর’ স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘সেন্টমার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে’ এ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি খবর প্রচারিত হচ্ছে, যা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, সেন্টমার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বা পরিবেশ অধিদপ্তর।
আজ ০৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে সেন্টমার্টিন দ্বীপে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় অংশীজনদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে গুরুত্বারোপ করা হয়। সেখানে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাবার জন্য রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম চালুর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আলোচিত হলেও এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি। অর্থাৎ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বা পরিবেশ অধিদপ্তর এধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
জনগণের নিকট সঠিক বার্তা প্রচারের স্বার্থে প্রকাশিত গণমাধ্যমসমূহে সংশোধনী প্রকাশের জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।‘
সঙ্গত কারণে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ‘সেন্ট মার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে’ -এমন দাবিযুক্ত পোস্টগুলোকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের পর্যটন মৌসুম ( অক্টোবর -এপ্রিল) শুরু আগেও একই ভাবে রেজিস্ট্রেশন এর একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো আগাম রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতি বা ফি ছাড়াই পর্যটকরা এই দ্বীপে ভ্রমণ করতে পেরেছিলেন।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।