সুনামগঞ্জে পুলিশকে এলাকাবাসীর ধাওয়া দেওয়ার ভিডিওটি ভিন্ন দাবিতে প্রচার 

40
সুনামগঞ্জে পুলিশকে এলাকাবাসীর ধাওয়া দেওয়ার ভিডিওটি ভিন্ন দাবিতে প্রচার 
সুনামগঞ্জে পুলিশকে এলাকাবাসীর ধাওয়া দেওয়ার ভিডিওটি ভিন্ন দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি ফেসবুকে পুলিশকে ধাওয়া দেওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করতে গেলে এভাবেই এলাকাবাসী পুলিশকে ধাওয়া দেয়। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সুনামগঞ্জে গত এক সপ্তাহ ধরে মাছ লুটের বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। অন্তত ৯টি জলমহাল থেকে লুট করা হয়েছে কয়েক কোটি টাকার মাছ। গত শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে জেলার শাল্লা উপজেলার সতোয়া জলমহালে মাছ লুট করতে যায় হাজারও জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের বাঁধা দিতে গেলে আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজারও জনতা তাদের ধাওয়া দিয়েছে। এতে পুলিশ ও মাছ লুট করতে আসা জনতার মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ভিডিওকেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতারের প্রতিবাদ বলে ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে।

মিথ্যা তথ্যযুক্ত এ ধরনের পোস্টগুলোর কয়েকটি এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে প্রচুর ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টগুলোর ক্যাপশনে বলা হয়, 

সুনামগঞ্জ শাল্লা আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গেলে এলাকাবাসী একজোট হয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। 

এরপর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এসব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বিলগুলোতে রীতিমতো মাছ লুটের হিড়িক পড়েছে। মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের সামনেই হাজার হাজার লোক বিলে নেমে মাছ লুট করে নিচ্ছে। ৫ দিনে এই দুই উপজেলার অন্তত ৮টি বিলের মাছ লুট করা হয়েছে। ইজারাদারদের দাবি, এই বিলগুলো থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকার মাছ লুট করে নেওয়া হয়েছে। 

আরও অনুসন্ধানে জানা যায়, মাছ লুটের ঘটনায় পুলিশ বাধা দিতে গেলে ‘স্থানীয় জনতা’ সম্মিলিতভাবে পুলিশের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভরত জনতা জলমহাল ইজারাদারদের ২টি ছাউনি ঘর ও নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ইত্তেফাকের প্রতিবেদন থেকে পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়। শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপে জলমহাল এলাকা ছেড়ে যান মাছ ধরতে আসা কয়েক হাজার জনতা। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। জলমহালের মাছ সুরক্ষায় পুলিশ সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে। 

এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এবং ফেসবুকে ছড়ানো ভিডিওর সঙ্গে প্রতিবেদনেযুক্ত ছবি মিলিয়ে দেখে এটি স্পষ্ট যে, ভিডিওটি মাছ ধরতে আসা এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনার। কোনো নেতাকে ধরতে আসা পুলিশকে ধাওয়া দেওয়ার ভিডিও নয়। ফলে সঙ্গত কারণে এসব ফেসবুক পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হলো।  

Claim:
সম্প্রতি ফেসবুকে পুলিশকে ধাওয়া দেওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করতে গেলে এভাবেই এলাকাবাসী পুলিশকে ধাওয়া দেয়।

Claimed By:
facebook users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh