সম্প্রতি “শিশুর শরীরে হটাৎ করে গজাচ্ছে পশুর লোম!” শিরোনামে একটি খবর ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে সংবাদটি পুরনো, যা বিভ্রান্তিকর। ২০১৯ সালে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শিশু তাসফিয়া জন্ম থেকেই এই জটিল রোগে আক্রান্ত। ফলে, তার শরীরে হঠাৎ করে পশুর লোম গজাচ্ছে – এমন দাবিও অসত্য।
ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপের বরাত দিয়ে পুরো আগস্ট মাস জুড়ে একাধিক অনলাইন পোর্টাল এই বিভ্রান্তিকর খবরটি প্রচার করেছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানেএখানে।
ঘটনার সত্যতা যাচাই
ফ্যাক্টওয়াচ যাচাই করে দেখেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের শিশু তাসফিয়া জাহান মনিরার সারা শরীরে লোম ছড়িয়ে পড়ার খবরটি ২ বছর আগের। সে সময় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, তাসফিয়ার বয়স যখন ছয় দিন, তখন তার শরীরে এ সমস্যাটি প্রথম ধরা পড়ে। শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, চিকিৎসকরা তাসফিয়ার বয়স ৩-৪ বছর হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত চ্যানেল২৪ -এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রথম অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছিল। চিকিৎসকরা তখন বলেছিলেন, আরো কয়েকটি অস্ত্রোপচার ও সঠিক চিকিৎসা পেলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে তাসফিয়া।
অন্যদিকে, অনলাইন পোর্টালগুলো মূলত নতুন কোন তথ্যের সন্নিবেশ ছাড়াই দুই বছর আগের এই খবরটি হুবহু প্রকাশ করছে। এতে করে এটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা ভেবে পাঠককে বিভ্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। উপরন্তু, ভাইরাল শিরোনামে লেখা হচ্ছে ‘হটাৎ করে গজাচ্ছে পশুর লোম’ — এটি অসত্য। বাস্তবে, ৪ বছরের তাসফিয়ার শরীরে হঠাৎ করে লোম ছড়িয়ে পড়েনি, বরং জন্ম থেকেই ত্বকের এই বিরল রোগে আক্রান্ত সে।
সাধারণ পাঠকের বিভ্রান্ত হবার নমুনা
সিদ্ধান্ত
ফেসবুকে ভাইরাল শিশুর শরীরে হঠাৎ করে লোম গজানোর খবরটি পুরনো এবং আংশিক অসত্য। নতুন তথ্যের সন্নিবেশ ছাড়াই পুরনো খবরটি হুবহু ছড়িয়ে পড়াতে সাধারণ পাঠক বিভ্রান্তির স্বীকার হচ্ছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত খবরটিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?