আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন তাহেরী?

23
আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন তাহেরী? আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন তাহেরী?

Published on: [post_published]

যা ছড়িয়েছে: শায়খ আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী হাইকোর্টে মামলা করেছেন। দাবিটির সাথে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রচার করে বলা হয়েছে মামলা যে করেছেন এই ভিডিও ফুটেজ তার প্রমাণ।

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। উক্ত দাবির সাথে যেই ভিডিও ফুটেজগুলো প্রচার হয়েছে তা ২০২২ সালের। সে সময়ে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে ওয়াজ করতে অগ্রিম টাকা নিয়ে ওয়াজ না করার অভিযোগ এসেছিল। এমন দাবিকে গুজব উল্লেখ করে তাহেরি ২৪শে মার্চ ২০২২ তারিখে সিলেটের সাইবার ট্রাইবুনালে গিয়ে ‘গুজব প্রচারকারীদের’ বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই ফুটেজ প্রচার করে দাবি করা হয়েছে ইসলামিক বক্তা আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে তাহেরী মামলা করেছেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে মুফতি তাহেরি এবং শায়খ আহমাদুল্লাহর মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলছে। তবে তাহেরী যে আহমাদুল্লাহর বিরূদ্ধে মামলা করেছেন কোনো সূত্র থেকে এমন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর এবং শায়খ আহমাদুল্লাহর ফেসবুক একাউন্টে কিছু উল্লেখ নেই, গণমাধ্যমেও কোনো সংবাদ নেই।

এই ধরনের দাবিতে ভাইরাল হওয়া কিছু গুজব দেখতে পাবেন এখানেএখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া:

ফেসবুক ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড দিয়ে গুগলে অনুসন্ধান করা হয়। সেখান থেকে জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী শায়খ আহমাদুল্লাহকে আল্টিমেটাম এবং তার বিরূদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই ভিডিওতে

উল্লেখ্য, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কবে থেকে আল্লাহুর নবী- এ রকম বিষয় নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছে এমন দাবি করে একাধিক বক্তব্য দেন তাহেরী । তাহেরির দাবি, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) জন্মগতভাবেই নবী ছিলেন। এরপরে বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তাহেরী আহমাদুল্লাহকে আল্টিমেটাম এবং তার বিরূদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন।

আলোচিত বিষয়টি নিয়ে তাহেরী যুগান্তর পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, “শায়খ আহমাদুল্লাহর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব নেই। উনার (শায়খ আহমাদুল্লাহ) সঙ্গে আমার সমস্যা আকিদা-কেন্দ্রিক। উনি একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই বক্তব্যটি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা আমাকে ইনবক্স করে জিজ্ঞেস করে বক্তব্যর ভিত্তি কতটুকু? শায়খ আহমাদুল্লাহ নাকি বলেছেন, “৪০ বছর আগে মোহাম্মদ (সা.) নবী ছিলেন না, তিনি তার পরে নবী হয়েছেন”। আমি তার বিরোধিতা করিনি কিন্তু এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছি”।

অধিকন্তু, শায়খ আহমাদুল্লাহর নামে আরেকটি বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে পূর্বের বক্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী! যদিও শায়খ আহমাদুল্লাহর ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে যেয়ে দেখা যাচ্ছে এমন কোনো পোস্ট সেখানে নেই। তাছাড়া ভাইরাল পোস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে কোনোপ্রকার যতিচিহ্ন ছাড়া পোস্টটি করা হয়েছে। অথচ আহমাদুল্লাহকে তাঁর প্রতিটি পোস্টে যতিচিহ্ন ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ফলে আহমাদুল্লাহর নামে চালানো সেই একাউন্টটাকে নকল বলেই মনে হচ্ছে।

বর্তমানে আহমাদুল্লাহর বিরুদ্ধে তাহেরী হাইকোর্টে মামলা করেছেন দাবিতে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে পাওয়া গেছে ভিডিওটি ২০২২ সালের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন গিয়াস উদ্দিন তাহেরী। মামলা করতে ট্রাইব্যুনালে যাবার সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে আহমাদুল্লাহর বিরূদ্ধে তাহেরী হাইকোর্টে মামলা করেছেন।

সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ পুরানো ভিডিওর এই দাবিকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিচ্ছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.