হাফেজ তাকরিম পুরষ্কারের টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দিয়ে দিচ্ছেন?

96
হাফেজ তাকরিম পুরষ্কারের টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দিয়ে দিচ্ছেন?
হাফেজ তাকরিম পুরষ্কারের টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দিয়ে দিচ্ছেন?

Published on: [post_published]

দুবাই এর আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনকারী হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম তার পুরষ্কারে জেতা ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দান করে দিয়েছেন – এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে এই খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়া কিশোর তাকরিম এর অভিভাবক, মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, ৭১ লক্ষ টাকা দান করার খবরটি একটি গুজব ।

গুজবের উৎস

ভাইরাল কয়েকটি পোস্ট দেখুন  এখানে , এখানে  , এখানে , এখানে , এখানে, এখানে


ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

গত ৪ই এপ্রিল সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার বিপনী কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একই দিনে, অর্থাৎ ৪ই এপ্রিল রাতে দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী প্রতিযোগী, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে প্রথম বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরদিন ৫ই এপ্রিল বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন হাফেজ তাকরিম, যেখানে তার সঙ্গে ছিলেন তার উস্তাদ, মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামী ঢাকার প্রিন্সিপাল মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজি মাসুম। বিমানবন্দরে মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকালকে যে ট্রাজেডিতে আমাদের বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন ভেঙেছে, আমরা তাদের মনোব্যথা লাঘবের জন্য  এই অর্জনটি তাদের জন্য উপহার দিচ্ছি’ ।

তার এই বক্তব্যটি দেখতে পাবেন এখানে , এখানে

তাঁর বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, এই ‘উপহার’ দেওয়াটি কেবলমাত্র আলংকারিক অর্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। আক্ষরিক অর্থে এই অর্জন হস্তান্তরযোগ্য নয়। পুরষ্কারের অর্থমূল্য যদিও হস্তান্তরযোগ্য, তবে মুফতি মুরতাজা হাসান এর বক্তব্যে এ ধরনের কোনো অনুদান এর কথা উল্লেখ করা হয়নি।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাফ মহিলা ফুটবল জয়ের পর বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা এই অর্জনটা বাংলাদেশকে ‘উপহার’ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। মুফতি মুরতাজা হাসান ও এই ধরনের আলংকারিক অর্থে ‘উপহার’ এর কথা উল্লেখ করেছিলেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এদিকে ,  মুরতাজা হাসান এর বক্তব্যটা সঠিকভাবে না বুঝে অনেকে ফেসবুকে এবং ইউটিউবে প্রচার করেন, হাফেজ তাকরিম দুবাই থেকে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের উপহার দিচ্ছেন। দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এই খবরটা।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম এর বয়স ১৩ বছর। গত কয়েক বছরে তিনি একাধিকবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য অর্জন নিয়ে পত্র-পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন । বর্তমানে তিনি লেখাপড়া করছেন ঢাকার মিরপুর এর মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী নামক মাদ্রাসায় ।  এই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুমই সংবাদমাধ্যমের সাথে হাফেজ তাকরিম এর ব্যাপারে কথা বলেন। সর্বশেষ গত ৯ই এপ্রিল তিনি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন, ৭১ লক্ষ টাকা দানের খবরটি একটি গুজব।

বাংলাভিশন কে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা দেখছেন তা একটি গুজব। তাকরীমের পক্ষ থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

তিনি আরো জানান , ‘তাকরীম ছোট মানুষ। আপনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে না জেনে এমন কিছু ছড়াবেন না, যাতে তাকরীম মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

একই ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে ডেইলি ক্যাম্পাস এবং জুম বাংলায়

তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ সংক্রান্ত পোস্টগুলোকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.