সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে তারেক রহমানের সেলফি দাবিতে একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার হতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জাস্টিন ট্রুডোর তোলা এমন কোনো সেলফি খুঁজে পাওয়া যায়নি। জাস্টিন ট্রুডো মূলত বারাক ওবামার সাথে এমন একটি সেলফি তুলেছিলেন। সেই ছবিতে এডিট করে বারাক ওবামার স্থানে তারেক রহমানের মুখ বসিয়ে দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া ছবিটিকে “বিকৃত” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ভাইরাল হওয়া ছবিতে জাস্টিন ট্রুডোর সাথে আসলেই তারেক রহমানের ছিল কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে এনডিটিভির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ৩০ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবিটির পূর্ব সংস্করণের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ট্রুডোর সাথে বারাক ওবামাকে দেখা যায়। কানাডার অটোয়াতে ২০১৬ সালের ২৯ জুন অনুষ্ঠিত উত্তর আমেরিকার নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো বারাক ওবামার সাথে সেলফিটি তুলেছিলেন। এই দুই রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়াও মেক্সিকোর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এনরিক পেনা নেইতো (Enrique Pena Neito) সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে, ট্রুডো তার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও ছবিটি টুইট করেছিলেন। সেখান থেকেই ট্রুডোর করা সেই টুইটটি খুঁজে পায় ফ্যাক্টওয়াচ টিম।
কিন্তু, জাস্টিন ট্রুডো কখনও তারেক জিয়ার সাথে সেলফি তুলেছিলেন কিনা এ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, মূল ছবির সাথে ভাইরাল হওয়া ছবিটি তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে যে, মূল ছবিতে ওবামার মুখমণ্ডলের স্থানে তারেক রহমানের ছবি যুক্ত করে বিকৃত করা হয়েছে তবে, বাকি সবকিছু অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আবার ভাইরাল ছবিতে তারেক জিয়ার মাথার পিছনের দিকের দেয়ালের কিছু অংশ ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। মূল ছবিতে ট্রুডো এবং ওবামা একই দিকে তাকিয়ে আছেন কিন্তু, ভাইরাল ছবিতে তারেক জিয়া অন্য দিকে তাকিয়ে আছেন।
কানাডার অটোয়াতে ২০১৬ সালের ২৯ জুন অনুষ্ঠিত উত্তর আমেরিকার নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কিত ওবামা এবং ট্রুডোর ছবি যুক্ত আন্তর্যাতিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
তাই, উপরের উল্লেখিত প্রমাণের ভিত্তিতে ভাইরাল হওয়া ছবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিকৃত” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।