ফেসবুকে যা ছড়াচ্ছেঃ তারেক রহমানের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে, দাবি করা হচ্ছে উক্ত ভিডিওতে তিনি নিজের মুখে অপরাধ স্বীকার করেছেন।
আসল ঘটনাঃ ভিডিওটি বিকৃত। মূলত ৬ জানুয়ারী ২০২৪ এ বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন দেশবাসী এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমানের বক্তব্যের সম্পাদিত রূপ। মূল ভিডিওতে তারেক রহমান বিগত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করার জন্য বলছিলেন। তার এই বক্তব্যের ভিডিও থেকে ছোট ছোট অংশ নিয়ে সেগুলো আবার বিভিন্ন ভাবে জোড়া লাগিয়ে ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওটি খেয়াল করলে দেখা যাবে ভিডিও ক্লিপগুলো সুসঙ্গত নয়।
তারেক রহমান নিজের মুখে তার অপরাধ স্বীকার করেছেন, এই দাবিতে ফেসবুকে যেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ছে সেটা খেয়াল করলে দেখা যাবে, উক্ত ভিডিও ক্লিপগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যতার অভাব রয়েছে। তারেক রহমান একই স্থানে বসে বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে কিন্তু এক-একটি শব্দ বলার সময় ভিডিওতে অস্বাভাবিক ভাবে একটু ঝাঁকুনি দেখতে পাওয়া যায়।
পরবর্তিতে, তারেক রহমানের এই বক্তব্যটির উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে বিএনপির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এবং তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ভাইরাল ভিডিওটির পূর্ব সংস্করণের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। মূল ভিডিওতে তারেক রহমান দেশবাসী এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করা এবং হরতাল সফল করার জন্য বলছিলেন। মূলত ১৮ মিনিট ৬ সেকেন্ডের এই মূল ভিডিও থেকে বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ নিয়ে সেগুলো আবার বিভিন্ন ভাবে জোড়া লাগানো হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে তারেক রহমানের অপরাধের স্বীকারোক্তি দাবিতে বলা হচ্ছে,
“প্রিয় দেশবাসী, আমি বার বার একটা কথা বলেছি, আমি মাফিয়া চক্রের প্রধান, ক্ষমতা লোভী, দুর্নীতিবাজ। অপরদিকে মাফিয়া চক্রের উপর ভর করে নাশকতামূলক কার্যক্রম এবং আমার কারণে বাংলাদেশে অপেক্ষা করছে ভয়ংকর একবিপদ। সুতরাং আপনারা সতর্ক থাকবেন, সজাগ দৃষ্টি রাখবেন”।
তারেক রহমান মূল ভিডিওতে এমন কিছুই বলেননি। মূল ভিডিওতে এই সবগুলো শব্দ ঠিকই রয়েছে কিন্তু তা ভিন্ন অর্থ বহন করে। ভিন্ন প্রেক্ষাপটের এই ভিডিও থেকে বিভিন্ন শব্দ জোড়া দিয়ে নতুন ভিডিও তৈরির মাধ্যমে মূল বক্তব্যটি বিকৃত করা হয়েছে।
তাই, ফ্যাক্টওয়াচ খন্ডিত অংশ দিয়ে তৈরি ভাইরাল ভিডিওটিকে বিকৃত হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।