১৫ জুলাই, ২০২৪ তারিখে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর এক পর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে একাধিক শিক্ষার্থীর ছবি পোস্ট করে বলে হয়েছে তারা মারা গেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিও তাদের মধ্যে অন্যতম। একটি ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে ঢাবি এবং চবি তে দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। উক্ত দাবির সাথে খান তালাত মাহমুদ রাফির ছবি পোস্ট করা হয়েছে। পরবর্তীতে যা তুমুল ভাইরাল হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, খান তালাত মাহমুদ রাফি মারা যায়নি। মৃত্যুর দাবি ছড়িয়ে পড়ার পরেও তিনি ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন। ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট থেকে লাইভে এসেছেন এবং আন্দোলনের পক্ষে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
আলোচ্য পোস্টটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ঢাবি এবং চবি তে দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন”। সেখানে একজন ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি মারা গেছেন এমন বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ছবিতে থাকা ব্যক্তির পরিচয় অনুসন্ধান করে জানা যায় তার নাম খান তালাত মাহমুদ রাফি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়ক তিনি । তার ফেসবুক আইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৪ জুন ২০২৪ তারিখে “সমরাঙ্গনে ফুল ছিটাইয়া, হাসি দিয়া করিবো যুদ্ধ জয়!” ক্যাপশনে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবি বর্তমানে ভাইরাল হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে তার ছবি পোস্ট করে মৃত্যুর দাবি করা হয়েছে। অথচ ১৫ এবং ১৬ জুলাইয়ে যথারীতি তিনি ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন। ১৬ জুলাই তার একটি ফেসবুক পোস্ট হলো, “আপনারা সবাই ষোলশহরের দিকে যান এবং যেখানে নিরাপদ মনে হয় সেখানে অবস্থান নেন। মেসেজটা সবার কাছে পৌঁছে দেন”। এছাড়াও প্রায় একই অর্থাৎ ১২টা বেজে ১৭ মিনিটে তিনি ফেসবুক লাইভে এসেছেন। তাই নিশ্চিত বলা যায়, খান তালাত মাহমুদ রাফি মারা যাননি।
বলাই বাহুল্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরে যেই আক্রমণ হয়েছে তার ফলে কয়েক সহস্র শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে ইতিমধ্যে কারো মৃত্যু হয়েছে এমন সংবাদ এখনো পর্যন্ত গণমাধ্যমে আসেনি। কোটা সংস্কারের দাবির পক্ষে যারা আছেন তারাও এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেন নি।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।