সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে যে, জ্যান্ত মানুষকে হায়না দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে! এর সাথে কোকাকোলা বয়কটের প্রসঙ্গটিও টেনে আনা হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, “তারা আমাদের ভাইকে হায়না দিয়ে খাওয়াচ্ছে, আর আপনি এখনো Coca-cola ই ছাড়তে পারলেন না।” তবে, ফ্যাক্টওয়াচ টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি একটি পূর্ণাঙ্গ ভিডিওর টুকরো অংশ। মূল ভিডিওটিতে দেখে গেছে, নেকড়েজাতীয় কুকুরগুলো যে লোকটিকে আক্রমণ করেছিল তিনি আসলে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (Safety gear) পরে ছিলেন। তাছাড়া, মূল ভিডিওটির শেষাংশে দেখা গেছে, ঐ লোকটি মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক আচরণ করছেন এবং কুকুরগুলোর সাথে ঠাট্টা করছেন। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আলোচিত ভিডিওটি হায়না দিয়ে জ্যান্ত মানুষ খাওয়ানোর কোন দৃশ্য নয়। বরং, পুরো নিরাপত্তা নিয়ে একপাল কুকুরকে প্রশিক্ষণ প্রদানের ভিডিও। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
অনুসন্ধান:
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিটি সঠিক কিনা তা যাচাই করতে আমরা উক্ত ভিডিওটির উৎস অনুসন্ধান করি। আমাদের অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ বেশকিছু ভিডিও (১২৩৪) খুঁজে পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ভিডিওগুলো যাচাই করে দেখা গেছে, সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির পূর্ণাঙ্গ রূপ। মূল ভিডিওটিতে দেখা গেছে, কয়েকটি নেকড়েজাতীয় কুকুর দৌঁড়ে এসে একজন লোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে আক্রমণ করেছিল। কুকুরগুলো লোকটিকে মাটিতে ফেলে তার হাত এবং পা নিয়ে টানাহেঁচড়া করছিল। তবে, পুরো ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বুঝা গেছে, কুকুরগুলো যখন লোকটিকে আক্রমণ করেছিল তখন তিনি নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (Safety gear) পরে ছিলেন। ভিডিওটির একপর্যায়ে আরও দেখা গেছে, লোকটি মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক আচরণ করছেন এবং নেকড়েগুলোর সাথে ঠাট্টা করছেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, এই পশুগুলোর সাথে লোকটির আগে থেকেই সখ্যতা রয়েছে। অনেক সময় ট্রেইনাররা শিকারী কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি পরে তাদের প্রশিক্ষণ দেন।
যেহেতু সামাজিক মাধ্যমে মূল ভিডিওটির বদলে এর একটি অংশ প্রচার করা হয়েছিল, ফলে সেটি দেখে অনেকেই এটিকে হায়না বা কুকুর দিয়ে জ্যান্ত মানুষ খাওয়ানোর দৃশ্য ভেবে ভুল করেছেন। মূল ভিডিও দেখে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে যে রকম দাবি করা হয়েছিল সে রকম কিছু ছিল না৷
সুতরাং, সব কিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।