সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস নামক সংগঠনের নাম ব্যবহার করে একটি “বিশেষ বিজ্ঞপ্তি” প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, উক্ত সংগঠনটি হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত করার পুরস্কারস্বরূপ তাদের সকল শিবিরদের জন্য বিভিন্ন অংকের অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ঐ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। মূলত বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস কর্তৃক ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ প্রকাশিত “বা/জ/আ/হা/৪৫/০২/২২/৯২” রেফারেন্স নাম্বার সংবলিত একটি পুরানো বিজ্ঞপ্তিকে সম্পাদনা করে আমাদের আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের পক্ষ থেকেও আলেচিত বিজ্ঞপ্তিটিকে ভুয়া বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিটিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত করার জন্য তাদের কর্মীদের পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দিয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল কিনা তা যাচাই করতে আমরা উক্ত সংগঠনের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনুরূপ কোন বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায় কিনা সেটি দেখেছি। আমাদের অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের ওয়েবসাইট থেকে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ প্রকাশিত কুরআন ও সহীহ হাদীসের দারস চালুকরণ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া গেছে, যার রেফারেন্স নাম্বার “বা/জ/আ/হা/৪৫/০২/২২/৯২” এবং প্রকাশের তারিখ “০৬/০২/২০২২ ইং” এর সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিটির রেফারেন্স নাম্বার এবং প্রকাশের তারিখের মিল রয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত ফন্ট স্টাইলের সাথে আমাদের আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটিতে ব্যবহৃত ফন্ট স্টাইলের অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা গেছে। এ থেকে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের মূল বিজ্ঞপ্তিটিকে সম্পাদনা করে একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তি তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে, ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের মিডিয়া ইন-চার্জ মোহাম্মদ জনি আহমেদের সাথে কথা বলে জানিয়েছে যে উক্ত সংগঠনটি এমন কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। বুম বাংলাদেশের প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
অতএব, উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত করার জন্য অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা সংবলিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত বিজ্ঞপ্তি সংবলিত বিভিন্ন পোস্টের দাবিকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।