বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ এ গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তিনি এখন ভারতেই আছেন। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাকে জনসমক্ষে আসতে দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন সময় তাকে দেখতে পাওয়ার দাবি অনেকে করেছেন বটে, কিন্তু সেগুলো ভুয়া দাবি ছিল। সম্প্রতি ভারতে শেখ হাসিনাকে দেখতে পাওয়া গেছে বলে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে তিনি হরেক রকমের খাবার সামনে নিয়ে বসে আছেন। ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কিনা সেটি যাচাই করতে গিয়ে ফ্যাক্টওয়াচ টিম জানতে পেরেছে যে, সেটি পাঁচ বছরেরও বেশি পুরানো একটি ছবি। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে একটি সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে কুমুদিনী পরিবারের আতিথেয়তা গ্রহণের সময় তোলা ছবি এটি। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল ছবিটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
সামনে হরেক রকম পদের খাবার নিয়ে বসে থাকা শেখ হাসিনার ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে তার ভারতে অবস্থানকালীন সময়ের ছবি কিনা সেটি যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, একই ছবি ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত “কুমুদিনী পরিবারে ৩১ পদের খাবার খেলেন প্রধানমন্ত্রী” শিরোনামের খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু দৈনিক ইত্তেফাক নয়, কলকাতার সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনও আলোচিত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি তাদের খবরে ব্যবহার করেছিল। সংবাদ প্রতিদিনের খবরটিও ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী কমপ্লেক্সের ভারতেশ্বরী হোমসে রণদা প্রসাদ সাহা স্মারক সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে কুমুদিনী পরিবারের আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। মূলত ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তোলা ছবিটিকে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানকালীন সময়ের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে।
গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ এ শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাকে জনসমক্ষে আসতে দেখা যায়নি। তিনি ভারত ছেড়ে চলে যাচ্ছেন কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে ভাষণ দিচ্ছেন – এমন দাবিতে বেশকিছু পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। ফ্যাক্টওয়াচ সেগুলো যাচাই করে দেখেছে এবং ভুয়া বলে চিহ্নিত করেছে। এমন দুটো প্রতিবেদন পড়ুন এখানে এবং এখানে।
অতএব, উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভাইরাল ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং সেটি পাঁচ বছরের পুরানো একটি ছবি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে বিভ্রান্তিকর বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।