এবার মির্জা ফখরুল ইসলাম এর বক্তব্য দিয়ে তৈরি করা আজকের পত্রিকার একটি ফটোকার্ডের টেক্সট বিকৃত করে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে। বিকৃত ফটোকার্ডটিতে দাবি করা হচ্ছে যে, মির্জা ফখরুল নাকি বলেছেন, “ক্ষমতায় গেলে বাইডেন ও ঋষি সুনাকের বিচার করা হবে।” তবে, আজকের পত্রিকা’র ফেসবুক পেইজে অনুরূপ বক্তব্য সংবলিত কোন ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং, জি-২০ সামিটে জো বাইডেন এবং শেখ হাসিনার সেলফি তোলা নিয়ে মির্জা ফখরুলের একটি বক্তব্য সংবলিত ফটোকার্ড পাওয়া গেছে যেখানে তিনি বলেছেন, “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে।” তাছাড়া, আজকের পত্রিকা’র অন্যান্য ফটোকার্ড যাচাই করে দেখা গেছে সেগুলোর সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির ফন্টের আকার, শৈলী, এবং যতিচিহ্ন ব্যবহারের মাঝে কোন সামঞ্জস্য নেই। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এইসকল ভুয়া ফটোকার্ডের বক্তব্যকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির বক্তব্য আদতে মির্জা ফখরুল ইসলামের ছিলো কিনা তা যাচাই করতে আমরা আজকের পত্রিকা এর ফেসবুক পেইজটি ঘেঁটে দেখেছি এবং সেখানে অনুরূপ বক্তব্য সংবলিত কোন ফটোকার্ড খুঁজে পাইনি। তবে, আজকের পত্রিকা’র ফেসবুক পেইজ থেকে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ এ শেয়ারকৃত একটি ফটোকার্ডে জো বাইডেন এবং শেখ হাসিনা’র সেলফি তোলা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম এর একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে যেখানে তিনি বলেছেন, “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে।” পরবর্তীতে ঐ একই বক্তব্যকে শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করে আজকের পত্রিকা’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, যেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম জো বাইডেন এবং শেখ হাসিনা’র সেলফি তোলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে এবং সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি বলি, আমার পরামর্শটা নেবেন? সেটা হচ্ছে যে ওই ছবিটা বাঁধিয়ে গলায় নিয়ে ঘোরেন আর জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, আমেরিকা ও বাইডেন আমাদের (সরকার) সঙ্গে আছে। এত নিঃস্ব হয়ে গেছেন যে বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে ঢোল পেটাচ্ছেন – আমরা (সরকার) জিতে গেছি।”
Image: An Excerpt from the Ajker Patrika’s news article
তাছাড়া, আজকের পত্রিকা’র ফেসবুক পেইজ থেকে শেয়ারকৃত মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য সংবলিত অন্যান্য ফটোকার্ডগুলো যাচাই করে দেখা গেছে যে সেগুলোর সাথে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির ফন্টের আকার, শৈলী, এবং যতিচিহ্ন ব্যবহারের মাঝে কোন মিল নেই। যেমন: আজকের পত্রিকা’র অন্যান্য ফটোকার্ডগুলোতে কারও বক্তব্যে কোন উদ্ধৃতিচিহ্ন (“ ”) ব্যবহার করা হয় না, বক্তব্যের শেষে কোলন চিহ্ন (:) ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির বক্তব্যটিতে উদ্ধৃতিচিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে এবং বক্তব্যের শেষে কোলন চিহ্নের পরিবর্তে হাইফেন (-) ব্যবহৃত হতে দেখা গেছে।
Image: Comparison between the authentic and fake photocard
অতএব, উপরের আলোচনা থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে যে, সামাজিক মাধ্যমে মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য সংবলিত যে ফটোকার্ডটি শেয়ার করা হচ্ছে তা আজকের পত্রিকা তৈরি করেনি। বরং, মির্জা ফখরুল আদতেই বলেছেন এমন একটি বক্তব্য সংবলিত ফটোকার্ডকে টেমপ্লেট হিসেবে ব্যবহার করে এবং এর ভাষ্য পরিবর্তন করে সম্প্রতি তা শেয়ার করা হচ্ছে।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির বক্তব্যকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।