ফেসবুকে যা ছড়িয়েছে: বহুজাতিক জুতার ব্রান্ড বাটা ইসরায়েলের একটি পণ্য। তাই এই বাটাকে বয়কট করতে হবে।
অনুসন্ধানে যা জানা গেছে: বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান “বাটা”য় ইসরায়েলের কোনো মালিকানা নাই। বাটা কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯৪ সালে। তৎকালীন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের য্লিন (Zlín) শহরে। এটি এখন চেক প্রজাতন্ত্র দেশের অন্তর্গত। বাটার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন টোমাস বাটা। বর্তমানে বাটার কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের লুসার্ন শহরে অবস্থিত।
জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে গুগলে সার্চ করা হয়। সেখান থেকে জানা যায়, টোমাস বাটা জন্মগ্রহণ করেন চেকোস্লোভাকিয়াতে (চেক প্রজাতন্ত্র)। তাঁর মা ছিলেন ক্যাথলিক ধর্মের অনুসারী। মায়ের কাছে টোমাস বাটা খুব ছোটবেলায় ক্যাথলিক ধর্মের রীতিনীতি সম্পর্কে জেনেছিলেন। বাইবেলের কিছু পদ আবৃত্তিও শিখেছিলেন। টোমাস বাটা জাতিতে চেক। চেক জাতির ইতিহাস জানতে পারবেন এখানে। টোমাস বাটার পরিবার ক্ষুদ্র পরিসরে চামড়ার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। ছয় বছর বয়সে টোমাস বাটা বাবার কাছে জুতা তৈরি করা শিখেছিলেন। ১২ বছর বয়সে তিনি বাবার ব্যবসার সাথে নিজেকে জড়ান। যদিও ব্যবসার পরিধি ছিলো খুবই ক্ষুদ্র। যা থেকে উপার্জন হতো সামান্য। যে কারণে বাবার পুরনো ব্যবসা রেখে ১৮৯৪ সালে নিজেই ব্যক্তিগতভাবে জুতোর ব্যবসা শুরু করেন। আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন এখানে এবং এখানে। বাটার ওয়েবসাইট দেখা যাবে এখানে।
উল্লেখ্য, ৩ এপ্রিল ১৮৭৬ তারিখে টোমাস বাটা জন্মগ্রহণ করেন। ১২ জুলাই ১৯৩২ তারিখে তাঁর মৃত্যু হয়। টোমাস বাটার মৃত্যুর পরে বাটার ব্যবসায়িক কার্যক্রম যেভাবে প্রচলিত হয়েছে তা জানতে পারবেন নিউইয়র্ক টাইমস থেকে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে।
বাটা ডটকম থেকে জানা যাচ্ছে বর্তমানে ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ২৯টি দেশে তাদের কার্যক্রম চলমান আছে।
বলাবাহুল্য, ২০২৩ তারিখে ১৫ টি পণ্যের একটি তালিকা ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করা হয়েছিল, এই ১৫টি পণ্য ইসরাইলি পণ্য। ১৫টি পণ্যের মধ্যে জুতার কোম্পানি বাটার নামটি ছিলো। সেসময়ে ফ্যাক্টওয়াচ যাচাই করে দেখে পণ্যগুলো ইসরায়েলের নয়। বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টওয়াচ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখতে পাবেন এখানে।
সুতরাং ভাইরাল দাবি অনুযায়ী জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাটা ইসরায়েলের কোনো পণ্য নয়। তাই যথা সঙ্গত কারণে এমন দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।