লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

32
লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

Published on: [post_published]

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে লোকালয়ে চলে আসা একটি বাঘের ভিডিও ফুটেজ বেশ ভাইরাল হয়েছে। ফুটেজটিতে দেখা গেছে, বাঘটি ধানক্ষেতে ক্লান্ত অবস্থায় এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে। কেউ এটিকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ঘটনা বলে উল্লেখ করছেন। কেউ কেউ ভিডিও ফুটেজটিকে খুলনা, সাতক্ষীরা, এবং বাগেরহাটে বাঘ দিয়ে হালচাষ করানোর দৃশ্য হিসেবে ধরে নিয়ে মজা নিচ্ছেন। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ টিম অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে যে, লোকালয়ে বাঘ চলে আসার এই ঘটনাটি বাংলাদেশের কোন জেলার নয়। বরং, এটি ভারতের আসামের নগাঁও জেলার জেংনী গ্রামের একটি ঘটনা। বেশকিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মারফত জানা গেছে, ঘটনাটি আসামের নগাঁও জেলার লাওখোয়া বুড়চাপরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য (Laokhowa Burhachapori Wildlife Sanctuary) এর কাছে ঘটেছিল। আসামের বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আসামে বন্যা পরিস্থিতির কারণে খাদ্যের সন্ধানে বাঘটি অভয়ারণ্য ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসতে পারে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে। 

 

অনুসন্ধান:

লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ভিডিও ফুটেজটি বাংলাদেশের কিনা সেটি যাচাই করতে আমরা উক্ত ভিডিওর উৎস অনুসন্ধান করি। আমাদের অনুসন্ধানে ‘Republic’ নামক এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেল থেকে গত ০৪ জুলাই ২০২৪ এ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে, যার সাথে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজটির বেশ মিল রয়েছে। উক্ত ভিডিওর সাথে সংশ্লিষ্ট ক্যাপশন পড়ে জানা গেছে, ঘটনাটি আসামের নগাঁওয়ের একটি গ্রামে ঘটেছে এবং ঘটনাস্থলটি নগাঁও জেলার লাওখোয়া বুড়চাপরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কাছেই অবস্থিত। ‘Republic World’ নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে আমাদের আলোচিত ভিডিও ফুটেজের অনুরূপ একটি শর্টস ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে। উক্ত শর্টস ভিডিওতেও ঘটনাটিকে আসামের নগাঁও জেলার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


তাছাড়া, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড এবং নিউজ নাইন লাইভ নামক দুটো সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ মারফত জানা গেছে, লোকালয়ে বাঘ চলে আসার এই ঘটনাটি ভারতের আসামের। উক্ত সংবাদগুলোতে বলা হয়েছে, আসামে সাম্প্রতিক বন্যার মাঝে বাঘটি লোকালয়ে চলে এসেছে এবং দুজন মানুষ আহত করেছে। আহতরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং বিপদমুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন আসামের নগাঁও জেলা পুলিশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট (এসপি) স্বপ্ননীল দেকা। আসামের বন বিভাগ বাঘটিকে ট্রানকুলাইজ বা শান্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। আসামের বন বিভাগের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আরও বলা হয়েছে, আসামে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির কারণে খাদ্যের সন্ধানে বাঘটি হয়তো লোকালয়ে চলে এসেছে।


অতএব, উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। বরং, এটি ভারতের আসামের নগাঁও জেলার জেংনী গ্রামের ঘটনা।

যেসব পোস্টে এই ঘটনাটিকে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হচ্ছে, তার কিছু নমুনা দেখবেন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.