ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিরা কি নবীজির রওজার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ছিলেন?
মোহাম্মাদ আরাফাত
Published on: [post_published]
ফেসবুকে শেয়ারকৃত এমন কিছু পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।
ছবি: ফেসবুকে শেয়ারকৃত পোস্টের একটি নমুনা।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
রওজা রিয়াজ-উল-জান্নাত নামক জায়গাটি কিভাবে চিহ্নিত হলো?
ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটির কথককে আমরা দুটো জায়গার নাম উল্লেখ করতে শুনেছি: মসজিদ নববী এবং নবী মুহাম্মদ (সা:) এর কবর। উক্ত নাম দুটোর উপর ভিত্তি করে আমরা মসজিদ আল-নববীর ভিতরে নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধির অবস্থান খুঁজে বের করি। নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি বা রওজা মোবারক খুঁজতে গিয়ে আমরা রিয়াজ-উল-জান্নাত নামক একটি জায়গার নাম খুঁজে পাই। রিয়াজ-উল-জান্নাত হচ্ছে মসজিদ আল-নববীর ভিতরের একটি ছোট অংশ যা নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূ্র্ব দেয়াল থেকে শুরু করে পশ্চিমে অবস্থিত মিম্বর বা মিম্বর নববী (Minbar Nabawi) এর মাঝে অবস্থিত। রিয়াজ-উল-জান্নাত কে স্বর্গের বাগান (Garden of Paradise) নামেও অভিহিত করা হয়। আবু হুরাইরা এর বর্ণনামতে নবী মুহাম্মদ (সা:) বলেছেন যে, “আমার ঘর এবং মিম্বর এর মাঝে যে জায়গাটুকু তা স্বর্গের অনেকগুলো বাগানের একটি, এবং আমার জলাধার এর উপর আমার মিম্বর।” এখানে নবী মুহাম্মদ (সা:) তাঁর ঘর এবং মিম্বরের মাঝে অবস্থিত যে জায়গাটাকে “স্বর্গের বাগান” বলেছেন সেটিই রিয়াজ-উল-জান্নাত। রিয়াজ-উল-জান্নাত এর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই জায়গাটুকু পুরোটাই সবুজ গালিচায় (Carpet) মোড়ানো, যেখানে মসজিদ আল-নববীর অন্যান্য জায়গাগুলো লাল গালিচা ঢাকা। ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে দুজন ব্যক্তি যেখানে বসে সালাত আদায় করছিলেন, সেখানকার মেঝেতেও সবুজ গালিচা বিছানো। যেহেতু (১) ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটির কথক এর মারফত আমরা দুটো জায়গার নাম পেয়েছি, মসজিদ নববী এবং নবী মুহাম্মদ (সা:) এর কবর, এবং (২) পুরো মসজিদ আল-নববী বাদে শুধু রিয়াজ-উল-জান্নাত অংশটিই সবুজ গালিচায় মোড়ানো, সুতরাং আমরা বলতে পারি যে ঐ দুইজন ব্যক্তি রিয়াজ-উল-জান্নাত এ বসেই নামাজ পড়ছিলেন।
ছবি: রিয়াজ-উল-জান্নাত এর সবুজ গালিচা।
ঐ দুইজন ব্যক্তি কোন দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছিলেন?
আমরা এখন জানি যে ঐ দুইজন ব্যক্তি রিয়াজ-উল-জান্নাত এ নামাজ পড়ছিলেন। আমরা এখন রিয়াজ-উল-জান্নাত এর ভিতরের বিভিন্ন অংশ খুঁটিয়ে দেখবো এবং জানার চেষ্টা করবো রিয়াজ-উল-জান্নাত এ মানুষ কোন দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে। আমরা আগেই জেনেছি যে রিয়াজ-উল-জান্নাত নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূর্ব দেয়াল থেকে শুরু করে পশ্চিমে অবস্থিত মিম্বর নববী এর মাঝখানে অবস্থিত। এখন কোন ব্যক্তি যদি রিয়াজ-উল-জান্নাত এ দাঁড়িয়ে তার বাম হাত নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূ্র্ব দেয়ালের দিকে তাক করে এবং ডান হাত পশ্চিম দিকে তাক করে তাহলে সে নিজেকে দক্ষিণমুখী হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় আবিষ্কার করবে। এখানে উল্লেখ্য যে, মসজিদ আল-নববীর কিবলা হচ্ছে দক্ষিণমুখী। ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত মসজিদ আল-নববী এর একটি ম্যাপ দেখে আমরা আগের প্রাপ্ত তথ্যগুলো ক্রস-চেক করে দেখেছি। আগের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি বা রওজা মোবারক এর পূর্ব দেয়াল থেকে পশ্চিমের মিম্বর নববীর এর মাঝের জায়গাটি হচ্ছে রিয়াজ-উল-জান্নাত। মসজিদ আল-নববীর ম্যাপটিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি কিবলা নির্দেশ করা হচ্ছে মিম্বরের দিকে। আমরা জানি, যেকোন মসজিদের মিম্বর কিবলামুখী হয় যেখানে বসে বা দাঁড়িয়ে ইমাম প্রার্থনাকারীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় বক্তব্য দেন। আমরা প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে ইউটিউবে ভিডিও সার্চ করে রিয়াজ-উল-জান্নাত এর ভিতরে ধারণকৃত কয়েকটি ভিডিও খুঁজে পাই। একটি ভিডিওতে আমরা প্রার্থনাকারীদের রিয়াজ-উল-জান্নাত এ অবস্থিত মিহরাব, যেখানে বসে ইমাম সালাত পরিচালনা করেন, এবং মিম্বরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে দেখি। স্পষ্টতই তারা দক্ষিণমুখী হয়ে সালাত আদায় করছিলেন, যেহেতু মসজিদ নববীর কিবলা দক্ষিণ দিকে। এখন ঐ ইউটিউব ভিডিওটিতে দৃশ্যমান প্রার্থনাকারীরা যদি দক্ষিণমুখী হয়ে সালাত আদায় করে থাকেন তাহলে তাদের বামে অব্স্থান করছে নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষ। এখন এই বিষয়টি নিশ্চিত যে, নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি বা রওজা মোবারক কিবলার দিকে নয়, যেখানে মুখ করে দাঁড়িয়ে প্রার্থনাকারীরা সালাত আদায় করেন, বরং কিবলামুখী মিহরাব এবং মিম্বরের পূর্বে অবস্থিত। অতএব, রিয়াজ-উল-জান্নাত এ সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে আসা প্রার্থনাকারীরা কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করেন, নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধির দিকে মুখ করে নয়।
ছবি: মসজিদ আল-নববী এর ম্যাপ। রিয়াজ-উল-জান্নাত (লাল বক্সের ভিতর), নবীর রওজা মোবারক (কমলা বক্সের ভিতর), এবং কিবলা নির্দেশক তীর (সবুজ বৃত্তের ভিতর)।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে দৃশ্যমান ঐ দুইজন ব্যক্তি কোন দিকে মুখ করে নামাজ পড়ছিলেন? আমরা জানি, যেকোন মসজিদে মুসল্লীরা যেন কাতার সোজা রেখে দাঁড়াতে পারে সেজন্য প্রত্যেক কাতারে লম্বা দাগ টানা থাকে। মসজিদের এই সাধারণ বিষয়টিই আমাদেরকে ঐ দুইজন ব্যক্তি কোন দিকে মুখ করে নামাজ পড়ছিলেন — সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে সাহায্য করেছে। ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটি যদি ভালোভাবে লক্ষ্য করি তাহলে আমরা দেখবো ঐ দুইজন ব্যক্তি যে জায়গায় বসে সালাত আদায় করছিলেন সেই জায়গায় প্রার্থনাকারীরা যাতে কাতার ঠিক রেখে দাঁড়াতে পারেন সেজন্য সবুজ গালিচা এর উপর জায়নামাজ এর মতো ডিজাইন করা হয়েছে। ঐ দুইজন ব্যক্তি সেদিকেই মুখ করে বসে আছেন যেখানে অন্যান্য প্রার্থনাকারীরাও মুখ করে সালাত আদায় করেন। পুরো ব্যাপারটাকে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে বুঝতে পারবো যে, ঐ দুইজন ব্যক্তি রিয়াজ-উল-জান্নাত এর সবুজ গালিচার উপর বসে কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করছিলেন কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঐ সবুজ গালিচার উপর জায়নামাজ এর অনুরূপ ডিজাইন করা হয়েছে যাতে প্রার্থনাকারীরা কাতার ঠিক রেখে কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে পারেন। যদি ঐ দুইজন ব্যক্তি নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি এর দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন তাহলে তাদেরকে বাম দিকে অর্থাৎ, নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূ্র্ব দেয়ালের দিকে মুখ করে বসতে হতো। অতএব, ভিডিওটিতে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঐ দুইজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখেছি ততক্ষণ পর্যন্ত তারা কিবলামুখী হয়েই বসে ছিলেন এবং পুরো ভিডিওটিতে তাদেরকে বাম দিকে ঘুরে বসতে দেখা যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশদের জোরাজুরিতে তাদেরকে সালাম ফিরিয়ে উঠে সোজা চলে যেতে দেখা যায়।
ছবি: ভিডিওতে থাকা ঐ দুইজন ব্যক্তি কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ছেন। হলুদ রেখা দিয়ে কাতার বুঝানো হয়েছে।
নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি বা রওজা মোবারক
আমরা এখন নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি এবং এর চারপাশ নিয়ে আলোচনা করবো যাতে আমাদের পূর্বের বক্তব্যগুলো আরও সুস্পষ্ট হয়। নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি বা রওজা মোবারকটি মসজিদ আল-নববী বা নবীর মসজিদের ভিতরে একটি সমাধি কক্ষের মধ্যে অবস্থিত। তাঁর ঐ সমাধিটি আল-হুজরা আল-নবুইয়া (নবীর কক্ষ), আল-হুজরা আল-শরিফা (অভিজাত কক্ষ), আল-কুবর আল-শরিফ (অভিজাত সমাধি), বা আল-রওজা (বাগান) নামেও পরিচিত। নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের চারটি সম্মুখভাগের (Facades) প্রত্যেকটিই স্বর্ণের তৈরি গ্রিল দ্বারা বেষ্টিত এবং ক্যালিগ্রাফিক লিপি ও নকশা দিয়ে সাজানো। নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের দক্ষিণ দিকের সম্মুখভাগটিতে স্বর্ণের গ্রিলের মাঝে ছয়টি গর্ত আছে যা দিয়ে যথাক্রমে, নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি, আবু বকর এর সমাধি, এবং উমর এর সমাধি দেখা যায়। সমাধি কক্ষটির পশ্চিম দিকের সম্মুখভাগটিতে, যেখান থেকে রিয়াজ-উল-জান্নাত এর সীমানা শুরু হয়েছে, তিনটি স্তম্ভ রয়েছে এবং বর্তমানে ঐ স্তম্ভগুলোর মাঝে বইয়ের তাক (Shelves) স্থাপন করা হয়েছে। আমরা ইউটিউব থেকে প্রাপ্ত একটি ভিডিও দেখেছি যেখানে ভিডিওটির ধারক রিয়াজ-উল-জান্নাত এর পশ্চিম দিক থেকে হেঁটে এসে যথাক্রমে, মিম্বর নববী, মিহরাব, এবং নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের দক্ষিণ দিকের সম্মুখভাগটি অতিক্রম করেছিলেন। আরও একটি ভিডিওতে আপনারা নবীর সমাধি কক্ষের পশ্চিম দিকের সম্মুখভাগের স্তম্ভ এবং স্থাপিত বইয়ের তাকগুলো দেখতে পাবেন। ঐ একই ভিডিওতে আপনারা দেখবেন যে প্রার্থনাকারীরা দক্ষিণ দিকে মুখ করে অর্থাৎ, কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করছে এবং তাদের বামপাশেই নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূ্র্ব দিকের দেয়াল।
ছবি: নবীর সমাধি কক্ষের পশ্চিম দিকের সম্মুখভাগ (লাল বক্সের ভিতর), মুসল্লীরা কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ছে (হলুদ বক্সের ভিতর)।
রিয়াজ-উল-জান্নাত কি দর্শনার্থী এবং প্রার্থনাকারীদের জন্য উন্মুক্ত?
হ্যাঁ। মুসলমানদের জন্য এই রিয়াজ-উল-জান্নাত একটি পবিত্র স্থান এবং এখানে কেউ প্রার্থনা করতে আসলে তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয় না। হজ্বের মতো ব্যস্ত সময়গুলোতে এখানে দর্শনার্থী এবং প্রার্থনাকারীদের প্রচুর চাপ থাকে। ২০২০ সালে কোভিডের পর সৌদি আরবের হজ্ব এবং উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় রিয়াজ-উল-জান্নাত এ প্রার্থনার উদ্দেশ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতিপত্র (Permit) আবশ্যক করে দেয়। রিয়াজ-উল-জান্নাত এ নারী এবং পুরুষদের প্রার্থনার জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময় বেঁধে দেয়া আছে। ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে যে রিয়াজ-উল-জান্নাত এ প্রবেশের অনুমতির জন্য Nusuk (পূর্বের নাম Eatamarna) নামক একটি ওয়েবসাইটের নিজস্ব অ্যাপ দিয়ে অনুমতিপত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদনের সময় আবেদনকারী নারী নাকি পুরুষ সেটা উল্লেখ করতে হয় এবং আবেদনকারী কোন সময়টিতে রিয়াজ-উল-জান্নাত এ সালাত আদায় করতে ইচ্ছুক সেটাও দিন, তারিখ ও সময় দিয়ে উল্লেখ করতে হয়। একবার অনুমতিপত্র পেয়ে গেলে সেই ব্যক্তি তার জন্য নির্দিষ্ট দিন এবং সময়ে রিয়াজ-উল-জান্নাত এ উপস্থিত হয়ে সালাত আদায় করতে পারবে। Nusuk এর অ্যাপ ব্যবহার করে রিয়াজ-উল-জান্নাত এ প্রবেশের অনুমতিপত্রের আবেদনের জন্য বিভিন্ন ধাপগুলো দেখুন এখানে।
ছবি: রিয়াজ-উল-জান্নাত এ কেউ প্রার্থনা করতে আসলে তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয় না।
স্বাভাবিকভাবেই, রিয়াজ-উল-জান্নাত এ প্রার্থনাকারীদের প্রচুর ভিড় এবং তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে বিধায় কোন প্রার্থনাকারী যদি তার জন্য বরাদ্দকৃত সময়ের অতিরিক্ত সময় সেখানে অতিবাহিত করে তাহলে তাকে দায়িত্বরত পুলিশ বা গার্ড সেখান থেকে উঠিয়ে দিতে পারে। ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে যে দুইজন ব্যক্তিকে পুলিশ উঠিয়ে দিচ্ছিল তাদের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত সময় অবস্থান করার ব্যাপার থাকতে পারে। নবী মুহাম্মদ (সা:) এর কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করায় তাদেরকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে – এই দাবিটি আমরা আগেই প্রমাণসহ নাকচ করে দিয়েছি। তবে, আমরা ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটির উৎস খুঁজতে গিয়ে ইউটিউবে একটি রিল ভিডিও পেয়েছি যার ক্যাপশনে লেখা আছে, “রিয়াজ-উল-জান্নাত এর ভিতর সালাত আদায় করতে দীর্ঘ সময় নেওয়ায় রেগে গেলো সৌদি আরবের পুলিশ।” এখানে উল্লেখ্য যে, আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিষয়টি নিয়ে কোন সংবাদ খুঁজে পাইনি। সংবাদ খুঁজে না পাওয়ার ঘটনাটি অস্বাভাবিক কিছু নয় কারণ রিয়াজ-উল-জান্নাত এ অতিরিক্ত সময় অতিবাহন করায় কাউকে পুলিশ সেখান থেকে উঠিয়ে দিলে সেটা একটি স্বাভাবিক ঘটনার মতোই এবং এরকম ঘটনা যে প্রায়ই সেখানে ঘটে তা সহজে অনুমেয়। মূলত, বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের ফেসবুক পেইজের অনুসারী (Follower) সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে এইসকল ভিডিও এর একটি মনগড়া অর্থ দাঁড় করায়, যার আদতে কোন সত্যতা নেই।
ছবি: ইউটিউব রিল ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট।
অতএব, আমরা বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণাদি এর ভিত্তিতে দেখিয়েছি যে ঐ দুইজন ব্যক্তি রিয়াজ-উল-জান্নাত এ বসে নবী মুহাম্মদ (সা:) এর কবরের দিকে মুখ করে নয়, বরং কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তাছাড়া, আমাদের অনুসন্ধানের ফলাফল আরও জানাচ্ছে যে ঐ দুইজন ব্যক্তি যদি আদৌ নবীর কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন তাহলে তারা কিবলামুখী হয়ে না বসে তাদের বাম পাশে মুখ করে বসতেন কারণ ঐদিকে ছিলো নবী মুহাম্মদ (সা:) এর সমাধি কক্ষের পূর্ব দেয়াল। ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে তাদেরকে উঠে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কিবলামুখী হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া, রিয়াজ-উল-জান্নাত এ কোন ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবে বসে সালাত আদায় করলে তাকে উঠিয়ে দেওয়ার এক্তিয়ার পুলিশের নেই যদি না সে তার জন্য বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সেখানে ব্যয় করে।
সুতরাং, সকল তথ্য-প্রমাণাদি বিবেচনা সাপেক্ষে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটির কথকের দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
|
No Factcheck schema data available.