‘ভারতে এ বছরের হোলি উৎসবে গাড়ির মধ্যে দুজন মুসলিম ব্যক্তিকে মারধর করা হচ্ছে’ এমন ইঙ্গিত করে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, মারধরের শিকার ব্যক্তি দুইজন মুসলিম নন।
“অসাম্প্রদায়িকতার সবক দেওয়া ভারতে মুসলমানদের অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে তার একটি ছোট্ট নমুনা!”- এমন ক্যাপশনে ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করা হচ্ছে। ভিডিওতে একটি গ্রুপকে গাড়িতে বসে থাকা দুজন ব্যক্তিকে লাঠি হাতে আক্রমণ করতে দেখা যাচ্ছে । এক পর্যায়ে দুজনের একজনকে গাড়ির ভেতরেই এবং অপরজনকে গাড়ি থেকে বের করে পিটিয়ে আহত করতে দেখা যায়। এমন একটি পোস্টে Syed M Abdul Hafiz নামক ব্যবহারকারী কমেন্ট করেছেন, “হয়তো বা সময় হয়ে যাচ্ছে আমাদের গাজওয়াতুল হিন্দ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার!”। Jibon Ahmed Joy নামক আরেকজন কমেন্ট করেছেন, “বাঙালি হিন্দুদের উপরে সেইম টা করলে মনে হয় কিছুটা শান্তি পাওয়া যাবে।“
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে ভিডিওতে একটি নীল সাইনবোর্ডে হিন্দি ভাষায় “কুতুব বিহার” শব্দগুলো লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এ সূত্রে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Zee News থেকে ১৬ মার্চ,২০২৫ তারিখে প্রকাশিত “হোলির দিন রাজধানীতে গুন্ডামি! দিল্লির কুতুববিহার এলাকার ঘটনা” শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে প্রদর্শিত ভিডিওর সাথে ফেসবুকের আলোচ্য ভিডিও পুরোপুরি মিলে যাচ্ছে।
পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে ভারতীয় আরো দুটো সংবাদমাধ্যম NDTV ও India Today-এর প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। জানা যাচ্ছে, দিল্লির দ্বারকার গয়লা ডেইরি এলাকায় হোলির উৎসব চলাকালে এ আক্রমণের ঘটনা ঘটে। রাজু কুমার নামক ব্যক্তি তার বন্ধু রাজেশের সঙ্গে দেখা করতে ট্যাক্সি নিয়ে যাওয়ার সময় হোলি খেলায় ভুলবশত এক স্থানীয় ছেলের গায়ে রঙ লাগে এবং বিতর্ক শুরু হয়। উত্তেজনার মধ্যে রাজু ছেলেটিকে মারধর করলে সে ওই স্থান ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পর ছেলেটি তার বন্ধুদের সঙ্গে ফিরে এসে রাজু ও তার বন্ধুর ওপর হামলা চালায় এবং ট্যাক্সির জানালা ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত রাজুকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভারতীয় প্রতিবেদনের কোথাও তাদের মুসলিম এবং এ ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলে উল্লেখ করা হয়নি।
তাই ভুয়া দাবিতে ভাইরাল এসব পোস্টকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
No Factcheck schema data available.
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh