ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারকে ৭২ ঘন্টার কোনো আল্টিমেটাম দেয়নি

99
ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারকে ৭২ ঘন্টার কোনো আল্টিমেটাম দেয়নি
ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারকে ৭২ ঘন্টার কোনো আল্টিমেটাম দেয়নি

Published on: [July 18,2024]

যা দাবী করা হচ্ছে- সরকারকে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো। যদি দেশ আর দেশের পরিস্থিতিকে ঠিক করা না হয়,সরকারকে বহিষ্কার করা হবে!!

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে- জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন,ওএইচসিএইচআর, বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে একটি সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন । তবে এক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা বেধে দেননি, কিংবা সরকারকে ‘বহিষ্কার’ এর মত কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। এছাড়া, জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাগাদা দিয়েছেন। তবে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা অর্থাৎ ইউনেস্কো থেকে এ ধরনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গুজবের উৎস

ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

এসব পোস্টে বলা হয়েছে, “Breaking News”

সরকারকে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো। যদি দেশ আর দেশের পরিস্থিতিকে ঠিক করা না হয়,সরকারকে বহিষ্কার করা হবে!!!

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা- UNESCO ( United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ সংক্রান্ত কোনো সাম্প্রতিক বক্তব্য দেখা গেলনা।

প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের অন্য দু’টি সংস্থার দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলাদেশের কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা, ওএইচসিএইচআর, ইউএন হিউম্যান রাইটস নামক ভেরিফাইড এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্ট থেকে বাংলাদেশ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে।  ১৭ই জুলাই এর এক পোস্টে বলা হয়েছে,  ভলকার তুর্ক ( ওএইচসিএইচআর এর প্রধান) বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন । সকল সহিংসতা এবং বলপ্রয়োগ, বিশেষ করে প্রাণহানির , তদন্ত করতে হবে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে। বাকস্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা হল মৌলিক মানবাধিকার -তিনি বলেছেন।

এ বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত একটি খবর দেখতে পাবেন এখানে

অন্যদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁর মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক ১৭ই জুলাই নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং এ এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার আছে এবং সরকারকে সেই অধিকার রক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে খুব ভালভাবে অবহিত। নিবিড়ভাবে এবং উদ্বেগের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। আমি মনে করি বাংলাদেশ হোক বা বিশ্বের যেকোনো স্থানেই হোক, জনগণের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার অধিকার আছে। যেকোনো রকম হুমকি বা সহিংসতা থেকে বিক্ষোভকারীদের সুরক্ষিত রাখতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

এ সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন দেখতে পাবেন এখানে, এখানে। জাতিসংঘের ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে প্রেস কনফারেন্সটা দেখা যাবে এখানে

এসব বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বংলাদেশে চলমান সংঘাত নিরসনে কোনো সময়সীমা বেধে দেননি, কিংবা সরকারকে ‘বহিষ্কার’ করার মত কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। নিকট অতীতে কোনো দেশে জাতিসংঘের এ ধরনের হস্তক্ষেপ করারও কোনো নজির নেই।

সঙ্গত কারনে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এসকল দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.