ফেসবুকে ছড়িয়েছে: সাতক্ষীরার সায়েরের খালে অচেনা এক প্রাণী দেখা গেছে। তীব্র গরমে প্রাণীগুলো খালের কাদা-পানিতে ডুবে আছে।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত:দাবিটি মিথ্যা। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি সাতক্ষীরার সায়ের খাল বা বাংলাদেশের কোনো এলাকার নয়। মূলত ভিডিওটি উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্কের। পার্কটি পরিদর্শনের সময় কৃষ্ণ সুকরিত নামের এক নারী মুহুর্তটি ক্যামেরাবন্দী করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, সেখানে একাধিক জলহস্তী আনন্দের সঙ্গে কাদা-পানিতে গোসল করছিল। বিষয়টি দেখে প্রথমে তিনি বিস্মিত এবং পরে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
এই ধরনের দাবিতে ভাইরাল হওয়া কিছু গুজব দেখতে পাবেন এখানে,এখানেএবংএখানে।
ফ্যাক্টয়াচের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া:
ফেসবুক ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দুটি পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়েছিল। প্রথমত গুগল রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান দ্বিতীয়ত বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড দিয়ে গুগলে অনুসন্ধান।
ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে দেখা যায়, মূল ভিডিওটি উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্কের। কৃষ্ণ সুকরিত নামের নারীর ক্যামেরায় দৃশ্যটি ধারণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন এবং হুবহু একই ভিডিও দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্ক থেকে ধারণ করা ভিডিও চিত্র।
অপরদিকে কি-ওয়ার্ড দিয়ে গুগলে সার্চ করে দেখা যায়, সাতক্ষীরা জেলা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি খালের নাম প্রাণসায়ের। সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা ও শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য খালটি খনন করেন। তাঁর নাম অনুসারে খালটির নামকরণ করা হয় প্রাণসায়ের খাল। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যাচ্ছে, প্রাণসায়ের খালটি বর্তমানে মৃতপ্রায়।
সুতরাং আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডা দেশের ভিডিও বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার প্রাণসায়ের খালের নামে প্রচার করার কারণে দাবিগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।