সূর্যমুখী কি আসলেই সূর্যমুখী?

সূর্যমুখী ফুলের কাণ্ডে অক্সিন নামক একটি গ্রোথ হরমোন রয়েছে যেটি আলোর প্রতি খুবই সংবেদনশীল। সেজন্যে সূর্যের আলো কাণ্ডের যেদিকে থাকে, অক্সিন ছায়ার খোঁজে ঠিক তার উল্টোদিকে সরে যায়; এতে কাণ্ডের সেই পাশটা ফুলে যায় একটু। সূর্যমুখী কাণ্ডে হরমোনের এই নড়াচড়ার ফলে ফুলটি সূর্যের দিকে ঘুরে যায়।

সূর্যের অবস্থানের পরিবর্তনের সাথে সাথে সূর্যমুখী ফুলের যে পরিবর্তনটি আমাদের চোখে পড়ে সেটি মূলত অক্সিনের কারণে হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে বলে হেলিওট্রপিজম।

জীববিজ্ঞানী রজার হাঙ্গার্টার সূর্যমুখী গাছের একটি ভিডিও তৈরি করেন, যেখানে দেখা যায় দিনের শুরুতে সূর্যমুখী পূর্ব দিকে মুখ করে থাকলেও দিনশেষে সূর্যাস্তের সময় সেটি সূর্যের সাথে সাথে পশ্চিম দিকে মুখ করে আছে। রাতের অন্ধকারে সেটি ধীরে ধীরে শুরুর অবস্থানে ফিরে যায় এবং পরদিন আবারও একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করে।

তবে  হেলিওট্রপিজম কেবলমাত্র অল্পবয়সী সূর্যমুখী ফুলের বেলাতেই দেখা যায়।  রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে অল্পবয়সী সূর্যমুখী ফুলের গাছ সূর্যকে অনুসরণ করলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে গাছের কাণ্ড শক্ত হয়ে যায় এবং ফুলগাছগুলি সবসময় পূর্বদিকে মুখ করে থাকে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, দিনের বিভিন্ন সময় সূর্যমুখী ফুল ভিন্ন ভিন্ন দিকে তাকিয়ে থাকার বা সূর্যকে অনুসরণ করার একটি স্পষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। তবে এই প্রবণতাটি কেবলমাত্র অল্পবয়সী সূর্যমুখী ফুলের মধ্যেই দেখা যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে গাছের কান্ড নমনীয়তা হারিয়ে শক্ত হতে থাকে এবং অক্সিনের প্রভাবও কমতে থাকে। তখন স্থায়ীভাবে পূবমুখী হয়ে থাকে সূর্যমুখী।

 

Leave a Reply