‘দিহান টাকা কামানর জন্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছিল’ এই সংবাদটি কি সত্য?

Published on: January 14, 2021 

“দিহান তার মোবাইলের মাধ্যমে রেকর্ড করছিলো তাদের আপত্তিকর ভিডিও গুলো, যাতে টাকা ইনকাম করতে পারে” এই শিরোনামে একটি সংবাদ আজ ‘Jamunaway’ অনলাইন পোর্টাল থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তা ফেসবুকেও অনেকে শেয়ার করেছে। ফ্যাক্টওয়াচ প্রতিবেদনটির শিরোনামের সাথে বিবরণের সামঞ্জস্য পায় নি। বিবরণের কোথাও দ্বিতীয় বার এই দাবিটি উপস্থিত করা হয় নি। তাছাড়া, দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রগুলিতে কলাবাগানের ধর্ষণ-হত্যা ঘটনা সংক্রান্ত কোন ‘আপত্তিকর ভিডিও’র তথ্য মেলেনি এখন পর্যন্ত। তাই ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে শিরোনামটি মিথ্যা।

প্রতিবেদনটির শিরোনামে বলা হয়েছে, দিহান তার মোবাইলে তাদের আপত্তিকর ভিডিওগুলো রেকর্ড করেছে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে এমন দাবি করা হলো সেটি সংবাদে একেবারেই অনুপস্থিত। তাছাড়া, এরকম কোন ‘আপত্তিকর ভিডিও’ বিষয়ে অনুসন্ধান করে কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই মুহুরতে দেশের সংবাদ মাধ্যম গুলি এই ঘটনা নিয়ে প্রচুর প্রতিবেদন করলেও, প্রথম সারির কোন সংবাদপত্রে এই ধরণের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি (১৪ই জানুয়ারিতে খোঁজা হয়েছে)।

 

সংবাদটিকে আরও চটকদার করতে অনলাইন পোর্টালটি আনুশকা-দিহানের ছবির পাশাপাশি মেরুন রঙের টি-শার্ট ও জিন্স পরা আরেটি মেয়ের ছবি জুড়ে দিয়েছে। বলা বাহুল্য শিরোনামের দাবিকে কিছুটা শক্তপোক্ত করতেই কৌশলটি অবলম্বন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঘটনা বিকৃতির চেষ্টা করা হয় আরও কয়েকটি ধাপে। ব্যবহৃত ছবিটিতে লেখা হয়েছে “তাদের পরিকল্পনা ছিলঃ নিজেদের ভিডিও করে পর্ণগ্রাফিতে ছেড়ে টাকা ইনকাম”।

ছবিটি দেখুন

সর্বশেষ তথ্যানুসারে, অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে কিন্তু তাদের/তার ভিডিও ধারণের পরিকল্পনা কিংবা সেগুলো ‘পর্ণগ্রাফিতে’ ছেড়ে টাকা উপার্জনের বিষয়ে কোন তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। ধর্ষণের স্বীকারোক্তিমূলক প্রতিবেদনটি পড়ুন বাংলা ট্রিবিউনে

যমুনাওয়ে পোর্টালটির এই প্রতিবেদনেই বিস্তারিত অংশে কোথাও ‘আপত্তিকর ভিডিও’র কথা আর বলা হয় নি। মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের সাথে তাল রেখে কেবল ঘটনাটির সর্বশেষ পাওয়া তথ্যগুলোই লেখা রয়েছে সেখানে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ভিত্তিহীন কিন্তু চটকদার শিরোনামটি ‘ক্লিকবেইট’ হিসেবেই দেওয়া হয়েছে।

বিস্তারিত অংশের ছবিটি দেখুনঃ

 

‘Jamunaway’ অনলাইন পোর্টালের উক্ত খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ছড়ায় আজ। যেমন, GTV নামের একটি পাবলিক গ্রুপে সংবাদটি শেয়ার হয়েছে।

ফেসবুকের স্ক্রিনশট

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্তে “দিহান তার মোবাইলের মাধ্যমে রেকর্ড করছিলো তাদের আপত্তিকর ভিডিও গুলো, যাতে টাকা ইনকাম করতে পারে” – এই দাবিটি মিথ্যা। শিরোনামটি নিছক দৃষ্টিআকর্ষণের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এই রোমহর্ষক অপরাধটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পোর্টালে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র

‘Jamunaway’র প্রতিবেদন

বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ fb.com/search.ulab

Leave a Reply