পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম ধর্ম বইতে অমুসলিমদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য পাওয়া যায় নি

Published on: April 2, 2022

পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণির ‘ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় অমুসলিমদেরকে ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’ বলা হয়েছে- এমন একটি দাবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে , ২০১৯ সালের ‘ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বিষয়ক বইয়ে উক্ত তথ্যাদি ছিল। পরের বছরেই বইয়ে সংশোধনী আনা হয়। বর্তমানে প্রচলিত ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা বইটির কোথাও  অমুসলিমদের সম্পর্কে এমন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি ।

গুজবের উৎস

Jewel Aich নামের একটি আনভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট থেকে গত ২৯শে মার্চ সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে এ সম্পর্কিত একটি দীর্ঘ পোস্ট করা হয়। ২০০ বারেরও বেশি এই পোস্টটি শেয়ার করা হয় ফেসবুকে।

এই স্ট্যাটাসের সাথে একটি পোস্টারও সংযুক্ত করা হয় , যেখানে পাঠ্যবইয়ের দুটি পৃষ্ঠার অস্পষ্ট ছবি তুলে দেয়া হয়েছে।

পরবর্তী কয়েক দিনে পোস্টার এবং স্ট্যাটাস আরো বিভিন্ন একাউন্ট,পেজ এবং গ্রুপের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এমন কয়েকটা পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ভাইরাল এই পোস্টে বলা হয়েছে,

অমুসলিমরামিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’- শেখাচ্ছে পাঠ্যবই

সরকারি পাঠ্যবইয়ে অমুসলিমদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও বটে। তাদেরকে মিথ্যাবাদী,সম্পদ আত্মসাৎকারী এমনকি পশুর চেয়ে অধম হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম নৈতিকতা শিক্ষা বইয়ের ১৬ ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় এভাবেই অমুসলিমদেরকে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এই বিষয়টি মোটেও ভালো হয়নি। এগুলো পাল্টাতে হবে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মনে করেন, অমুসলিমদের এভাবে উপস্থাপনই ইসলামবিরোধী। এটি এক ধরনের চক্রান্ত। আর যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তারা।

চলতি বছর যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে তাতে এই বর্ণনা উল্লেখ আছে। জাতীয় পাঠ্যক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি এই বই চূড়ান্ত করেছে। বইটি লেখা সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন মুহাম্মদ তমীজুদ্দিন, মুহাম্মদ কুরবার আলী, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন মেহেরুন্নেসা।

এই বিষয়ে এনসিটিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এটির চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, আমি এখন বৈঠকে আছি। বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।

আখেরাতে বিশ্বাসে নৈতিক উপকার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এতসব কথা বলা হয়েছে অমুসলিমদের বিষয়ে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে মুসলমানরা কী বলেন, আর অসুমলমানরা কী বলেন, সে বিষয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

একজন অমুসলিমের চরিত্র হিসেবে পাঠ্যবইয়ে ইসলাম কী বলে এবং অমুসলিম কী বলে এভাবে কথা এগিয়েছে বইয়ে।

এতে বলা হয়: ইসলাম বলে: ইসলাম বলে আল্লাহর পথে গরিবদের জাকাত দাও।

জবাবে সে (অমুসলিম) বলে: জাকাত দিতে গেলে আমার সম্পত্তি করে যাবে। আমার অর্থের ওপর আমি সুদ নেব।

ইসলাম বলে: সবসময় সত্য কথা বলো। আর মিথ্যা থেকে বিরত থাকো।

উত্তরে সে (অমুসলিম) বলে: এমন সত্য গ্রহণ করে আমি কী করব? যাতে আমার কেবল ক্ষতিই হবে, লাভ হবে না।

আর এমন মিথ্যা থেকে আমি বিরত থাকব কেন? যা আমার জন্য লাভজনক হবে। যাতে কোনো দুর্নামের ভয় পর্যন্ত নেই।

এক জনশূন্য রাস্তা অতিক্রম করতে করতে সে (একজন ব্যক্তি) দেখলো একটি মূল্যবান বস্তু। ক্ষেত্রে ইসলাম এবং অমুসলিমের অবস্থান কী হবে সেখানেও আছে আপত্তিকর উপস্থাপনা।

এতে বলা হয়, ইসলাম বলে তোমার সম্পদ নয়। কিছুতেই তুমি এই জিনিস গ্রহণ করতে পার না। সে (অমুসলিম) উত্তর দেয়, আপনাআপনি যে জিনিস আসে তা কেন ছেড়ে দেব? এখানে তো এমন কেউ নেই যে দেখে পুলিশকে খবর দেবে বা আদালতে সাক্ষ্য দেবে। এরপর কেন আমি কুড়িয়ে পাওয়া অর্থ থেকে লাভবান হবো না।

শেষে বলা হয়েছে, সোজা কথায় জীবনের পথে প্রত্যেক পদক্ষেপে ইসলাম তাকে এক বিশেষ পথে চলার নির্দেশ দেবে। আর সে তার সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে চলবে। কেননা ইসলামের প্রতিটি জিনিসের মূল্য নির্ধারিত হয় আখিরাতের ফলাফলের উপর। কিন্তু সে (অমুসলিম) ব্যক্তি প্রত্যেক ব্যাপারে চিন্তা করে ইহকালের ফলাফলের ওপর।

অধ্যায়ের শেষে বলা হয়েছে, কেন আখিরাতের ওপর ঈমান ব্যতীত মানুষ মুসলমান হতে পারে না তা সুষ্পষ্টভাবে বোঝা গেল। মুসলমান হওয়া তো দূরের কথা প্রকৃতপক্ষে আখিরাতকে অস্বীকার করে মানুষ পশুর চেয়েও নিম্নস্তরে চলে যায়।

 

ক্লাস ফাইভ এর বইয়ে কি রয়েছে ?

NCTB (অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড)   এর ওয়েবসাইট থেকে ক্লাস ফাইভের ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা বইটা ডাউনলোড করে দেখা গেল, সেখানে ভাইরাল পোস্টটির দাবি অনুযায়ী পৃষ্ঠা ১৬ এবং ১৭ তে তেমন কিছুই পাওয়া যায় নি।

পরবর্তীতে পুরো বইটি ঘেঁটেও এরকম বিদ্বেষমূলক কোনো মন্তব্য বা কন্টেন্ট পাওয়া যায় নি।

প্রকৃতপক্ষে, এই দুই পৃষ্ঠায় ‘অমুসলিম’ শব্দটারই উল্লেখ নেই।

বইয়ের অতীত কোনো ভার্সনে কি এমন বক্তব্য রয়েছে ?

অমুসলিমরা ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’- শেখাচ্ছে পাঠ্যবই- এমন শিরোনামে একটি খবর পাওয়া গেল ঢাকা ট্রিবিউনে, গত ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে । খবরটির Cached ভার্সন দেখুন এখানে

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল,

সরকারি পাঠ্যবইয়ে অমুসলিমদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও বটে। তাদেরকে মিথ্যাবাদী,সম্পদ আত্মসাৎকারী এমনকি ‘পশুর চেয়ে অধম’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

পঞ্চম শ্রেণির ‘ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় এভাবেই অমুসলিমদেরকে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এই বিষয়টি মোটেও ভালো হয়নি। এগুলো পাল্টাতে হবে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মনে করেন, অমুসলিমদের এভাবে উপস্থাপনই ইসলামবিরোধী। এটি এক ধরনের চক্রান্ত। আর যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তারা।

চলতি বছর যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে তাতে এই বর্ণনা উল্লেখ আছে। জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি এই বই চূড়ান্ত করেছে। বইটি লেখা ও সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন মুহাম্মদ তমীজুদ্দিন, মুহাম্মদ কুরবার আলী, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন ও মেহেরুন্নেসা।

এই বিষয়ে এনসিটিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এটির চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমি এখন বৈঠকে আছি। এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।’

আখেরাতে বিশ্বাসে নৈতিক উপকার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এতসব কথা বলা হয়েছে অমুসলিমদের বিষয়ে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে মুসলমানরা কী বলেন, আর অসুমলমানরা কী বলেন, সে বিষয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

একজন অমুসলিমের চরিত্র’ হিসেবে পাঠ্যবইয়ে ইসলাম কী বলে এবং অমুসলিম কী বলে এভাবে কথা এগিয়েছে বইয়ে।

এতে বলা হয়: ইসলাম বলে: ‘ইসলাম বলে আল্লাহর পথে গরিবদের জাকাত দাও।’

জবাবে সে (অমুসলিম) বলে: জাকাত দিতে গেলে আমার সম্পত্তি করে যাবে। আমার অর্থের ওপর আমি সুদ নেব।

 ইসলাম বলে: সবসময় সত্য কথা বলো। আর মিথ্যা থেকে বিরত থাকো।

 উত্তরে সে (অমুসলিম) বলে: এমন সত্য গ্রহণ করে আমি কী করব? যাতে আমার কেবল ক্ষতিই হবে, লাভ হবে না।

আর এমন মিথ্যা থেকে আমি বিরত থাকব কেন? যা আমার জন্য লাভজনক হবে। যাতে কোনো দুর্নামের ভয় পর্যন্ত নেই।

এক জনশূন্য রাস্তা অতিক্রম করতে করতে সে (একজন ব্যক্তি) দেখলো একটি মূল্যবান বস্তু। এ ক্ষেত্রে ইসলাম এবং অমুসলিমের অবস্থান কী হবে সেখানেও আছে আপত্তিকর উপস্থাপনা।

এতে বলা হয়, ‘ইসলাম বলে এ তোমার সম্পদ নয়। কিছুতেই তুমি এই জিনিস গ্রহণ করতে পার না।’ সে (অমুসলিম) উত্তর দেয়, ‘আপনাআপনি যে জিনিস আসে তা কেন ছেড়ে দেব? এখানে তো এমন কেউ নেই যে দেখে পুলিশকে খবর দেবে বা আদালতে সাক্ষ্য দেবে। এরপর কেন আমি কুড়িয়ে পাওয়া অর্থ থেকে লাভবান হবো না।’

শেষে বলা হয়েছে, ‘সোজা কথায় জীবনের পথে প্রত্যেক পদক্ষেপে ইসলাম তাকে এক বিশেষ পথে চলার নির্দেশ দেবে। আর সে তার সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে চলবে। কেননা ইসলামের প্রতিটি জিনিসের মূল্য নির্ধারিত হয় আখিরাতের ফলাফলের উপর। কিন্তু সে (অমুসলিম) ব্যক্তি প্রত্যেক ব্যাপারে চিন্তা করে ইহকালের ফলাফলের ওপর।’

অধ্যায়ের শেষে বলা হয়েছে, ‘কেন আখিরাতের ওপর ঈমান ব্যতীত মানুষ মুসলমান হতে পারে না তা সুষ্পষ্টভাবে বোঝা গেল। মুসলমান হওয়া তো দূরের কথা প্রকৃতপক্ষে আখিরাতকে অস্বীকার করে মানুষ পশুর চেয়েও নিম্নস্তরে চলে যায়।’


পুরো বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম এই বিষয়গুলো শুনলাম আপনার কাছ থেকে। যদি ঠিক হয় তাহলে আমি প্রতিবাদ করব। আসল মানুষ তৈরি করতে হলে কোন সম্প্রদায় বা ধর্মান্ধ হলে সেটা মনুষ্যবিরোধী কাজ।’

‘এসব লেখা দেখে আমার ভেতর ভেতর অসম্ভব ঘৃণা জন্মায়। এতে শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আস্থা চলে গেছে। অবিলম্বে সরকারের নীতি নির্ধারণীদের এখানে নজর দেওয়া উচিত। না হলে জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষকে অমানুষ বানিয়ে দেবে, সঙ্গে মানুষকে ধর্মান্ধ বানিয়ে দেবে। আর শেষ পর্যন্ত একটি দেশে নানান সম্প্রদায়ের মানুষ আর এক সঙ্গে বাঁচতে পারবে না। এই রকম জুলুমবাজ প্রচার বইয়ের মধ্যে রয়েছে আমি কল্পনা করতে পারি না।’

 এ বিষয়ে জানতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

 নতুন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে বইয়ের এই অধ্যায়ের ছবি তুলে পাঠানো হলে তিনি এগুলো মোটেও সমর্থন করেন না বলে জানান। ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এগুলো ভালো কাজ না। এগুলো পাল্টাতে হবে।’

 শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘এই কথাগুলো ইসলাম পরিপন্থী। ইসলাম ধর্মের কোথাও অমুসলিমদের সম্পর্কে এ রকম কথা বলা নাই। ইসলাম সকল ধর্মের মানুষকে মর্যাদা দিয়েছে।’

 ‘গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে এটা হয়েছে। আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তাদের করালগ্রাস থেকে এনসিটিবিকে মুক্ত করব।’

ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/ডব্লিউবি

একই বিষয়ের আরেকটি প্রতিবেদন দেখতে পাওয়া যায় বাংলা রিপোর্ট এর ২০১৯ সালের এই প্রতিবেদনেও।

অর্থাৎ , ৩ বছরের পুরনো খবরের একটি অংশই বর্তমানে ফেসবুকে আবার ভাইরাল হয়েছে।

NCTB এর ওয়েবসাইট থেকে ২০১৯ সালের ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বই ডাউনলোড করে আলোচ্য বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেল।


বর্তমানে প্রচলিত বইয়ের সাথে ২০১৯ এর বইয়ের তুলনা করে দেখা গেল,  বইয়ের এই অংশে আলোচিত ‘আখিরাতে বিশ্বাসের নৈতিক উপকার’  উপ অধ্যায় টির শিরোনাম ঠিক রেখে ভিতরের বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। নতুন ভার্সনে ‘একজন অমুসলিমের চরিত্র’ অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে এবং কেবলমাত্র একজন আদর্শ মুসলিমের চরিত্র নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।

বর্তমানে প্রচলিত ১৪১ পৃষ্ঠার ইসলাম ধর্ম বিষয়ক পাঠ্যবইয়ের অন্য কোনো অংশেও এরকম কোনো নেতিবাচক বিষয়ের আলোচনা পাওয়া যায় নি।

নিউজ বাংলার প্রতিবেদন

নিউজবাংলা টুয়েন্টি ফোর ডট কম এই বিষয়ে গত ৩১শে মার্চ ২০২২ তারিখে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । পাঠ্যবইয়ে আসলেই অমুসলিমদের হেয় করা হয়েছে?  শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ,

এ ধরনের বার্তা বর্তমানের (২০২২ সালের) পঞ্চম শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ পাঠ্যবইয়ে নেই।

 তবে ২০১৯ সালের পাঠ্যবইয়ে এ ধরনের কিছু বার্তা ছিল। যা পরের বছরই সংশোধন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এই বই ছাপানোয় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়।


এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ গত দুই বছর ধরেই আমরা দেখছি। এর কারণ হলো, সংঘবদ্ধ একটি চক্র যখন কোনো ইস্যু পায় না, তখন পুরোনো বিষয় সামনে এনে জনগণকে বিভ্রান্ত করে আর এর ফাঁদে পা দেয় সাধারণ কিছু মানুষ।

‘দুঃখজনক হলেও সত্য, অসাবধানতাবশত যারা এগুলো ছড়াচ্ছে, তারা কখনও মূল বই ঘেঁটেও দেখে না। কিছু জ্ঞানপাপী সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের কাজ করে।’

 তিনি বলেন, ‘যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ ধরনের বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। এ ধরনের কাজ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্র।’

তিনি আরো বলেন, ‘২০১৯ সালে বিষয়টি জানার পর এনসিটিবি থেকে এ বইয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের কেউ এখন আর এনসিটিবির কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নেই এবং পরের বছরেই তা সংশোধন করা হয়েছিল।’

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে বর্তমান অর্থাৎ ২০২২ সালে প্রচলিত বইয়ে অমুসলিমদের সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক কোনো বাক্য নেই। ২০১৯ সালে প্রচলিত বইয়ে এমন বাক্য ছিল এবং সেটা ২০২০ সালেই পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেটি না উল্লেখ করে পুরনো বইয়ের রেফারেন্সে এরকম বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করায় ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply