শিক্ষামন্ত্রী কি পদত্যাগ করবেন?

দায়িত্বে অবহেলা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এনে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অন্য প্রান্তে পদত্যাগ না করে প্রশ্ন ফাঁসসহ সকল ইস্যুতে শক্ত হাতে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ নিয়ে হতাশ হয়ে শেষ পর্যন্ত ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগের অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০০ অর্জন আছে, দু’একটি ঘটনায় সর্ব অর্জন নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের কাজে কঠোর হোন। প্রশ্ন ফাঁসের মতো সরকারের মর্যাদাক্ষুণকারী তৎপরতার বিষয়ে যাতে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এরপর, ১৪ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আখন্দ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে হাইকোর্টে রিট করা হবে। আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আখন্দ জানান, সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো মন্ত্রী দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রধানমন্ত্রী তাকে অপসারণ করবেন। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন মহামারি আকার রূপ নিয়েছে। তাই শিক্ষামন্ত্রীকে বলব ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ করুন। নতুবা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করুন। ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ দাবি করেন।

জনপ্রিয় লেখক, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ বা ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখা প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধের সমাধান নয়। ইন্টারনেট বন্ধ না করে প্রশ্নফাঁসের উৎস খুঁজলে কাজের কাজ হতো। ১৩  ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে সিলেটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। জাফর ইকবাল বলেন- কীভাবে, কারা প্রশ্নফাঁস করছে তা আগে খুঁজে বের করতে হবে। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে প্রশ্নফাঁস রোধ কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে হলে সরকারকে প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতেই হবে।

অতএব, শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ বিষয়ে আমরা কোন সঠিক তথ্য খুঁজে পাইনি।

 

Leave a Reply