ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কি আসলেই ভুয়া ভিডিও তৈরি সম্ভব?

গত কয়েকমাস যাবত অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে ভুয়া ভিডিও তৈরি সংক্রান্ত কিছু সংবাদ। ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’ মুভির জন্যে বিখ্যাত গ্যাল গাদতের একটি এডাল্ট ভিডিও। অনেকেই আশংকা করছেন, খারাপভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্য থাকলে এই প্রযুক্তির সাহায্যে রাজনৈতিক অঙ্গনেও করা সম্ভব অনেক কিছু।

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে এরকম প্রযুক্তি বর্তমানে রয়েছে এবং প্রযুক্তিটি বেশ সহজলভ্যও বটে। ডিপফেকস প্রযুক্তিটি সর্বপ্রথম সবার সামনে আসে একই নামে খোলা একটি রেডিট একাউন্ট থেকে। যেখানে পুরো প্রক্রিয়াটি সবাইকে জানান একজন ব্যবহারকারী। ভুয়া ভিডিও তৈরির একটি টিউটোরিয়াল হিসেবেও ধরা যায় সেই একাউন্টটিকে। পরবর্তীতে ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠায় একাউন্টটি মুছে ফেলে রেডিট কর্তৃপক্ষ।

ভুয়া ভিডিও তৈরির এই প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বাজফিড একটি ভিডিও তৈরি করেছে যেখানে বারাক ওবামা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে আপত্তিজনক কথাবার্তা বলছেন। পুরো ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে ডিপফেকস ব্যবহার করে। আর ভিডিওর শেষে এটাও দেখানো হয় যে কথা বলা ব্যক্তি মোটেও বারাক ওবামা নন, তিনি জর্দান পিল নামক একজন অভিনেতা। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই প্রযুক্তি কীরকম অস্থিরতা তৈরি করতে সক্ষম সেটা দেখানোই ছিলো এই ভিডিওর উদ্দেশ্য।

ডিপফেক প্রযুক্তিটির মূলে রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ার ব্যবহার করে বিভিন্ন দিক থেকে একই ব্যক্তির অসংখ্য ছবি নিয়ে একটি ত্রিমাত্রিক মাস্ক তৈরি করা হয়। তারপর এই মাস্কটি বসিয়ে দেওয়া যায় যেকারো চেহারার উপর। 

এখন পর্যন্ত ডিপফেকসের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বেশ কিছু ওয়েবসাইট। রেডিট ডিপফেকস নামক ব্যবহারকারীকে ব্যান করে দেবার পর বিভিন্ন পর্ন সাইটও শক্ত অবস্থান নিয়েছে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা ভিডিওগুলির বিরুদ্ধে। তবে, হাতেগোণা কয়েকটি ওয়েবসাইট বাদে বেশিরভাগই এ ব্যাপারে হুশিয়ার হয়নি এখনো। আর নিয়ন্ত্রণহীন ডার্ক ওয়েবের কথা বিবেচনা করলে ডিপফেকস অদূর ভবিষ্যতে সত্য-অসত্য বোঝায় আমাদের আরো মুশকিলে ফেলে দিতে পারে।

Leave a Reply